বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে দেশের সরকারী একমাত্র মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে খাবার সরবারাহের নামে প্রায় অর্ধকোটি টাকার পুরোটাই লোপাট হয়েছে। মহিষের ভাগে জোটেনি খাবারের কানাকড়িও। এনিয়ে সোরগোল শুরু হওয়ায় গকতাল ১১ জুলাই সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কিছু খাবার সরবরাহ করছে। 

প্রানি সম্পদ অধিদপ্তরের দরপত্রের সমূদয় শর্ত পালনের চুক্তিনামা মোতাবেক গত ১৩ মার্চ ঢাকার সাভারের আশুলিয়া নয়ারহাট বাজার এলাকার মেসার্স মাহিন বিল্ডার্স কে চলতি বছরের ১০ জুন কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। বাগেরহাটের ফকিরহাট মহিষ প্রজনন কেন্দ্র ও টাঙ্গাইলের মহিষের বাছুর পালন খামারে পশু খাদ্য সরবরাহে ৪৬ লাখ ৮২ হাজার চারশত টাকার মূল্যের খাবার সরবরাহের নিমিত্তে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। কার্যাদেশটিতে স্মাক্ষর করেন প্রানি সম্পদ অধিদপ্তরের মহিষ উন্নয়ন প্রকল্পের (২য় পর্যায়) পিডি ডা. মো. রফিকুল ইসলাম।

কিন্তু কার্যাদেশের মেয়াদ উত্তীর্ন হলেও গত ৩০ শে জুন পর্যান্ত মহিষের জন্য বরাদ্দকৃত একটি খাবারও প্রদান করেনি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে প্রকল্পের সমূদয় টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এমনকি মালামাল গ্রহন কমিটির অনেকেই জানেন না খাবার প্রদান না করে টাকা উত্তোলনের খবর। এমনকি মালামাল গ্রহন কমিটির চালান ফর্মে খামার ব্যবস্থাপকসহ অন্য একজন সদস্য স্বাক্ষর করেছেন। বাকী সদস্যদের স্বাক্ষর পর্যন্ত নাকি প্রয়োজন হয়নি। দেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন খামারটি অব্যবস্থাপনা ও যথাযথ অর্থ বরাদ্দের অভাবে যেমন রয়েছে। তেমনি বরাদ্দকৃত অর্থের অপচয় হচ্ছে এমন ভাবে। বর্তমানে অলাভজনক রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ১৯৮৬ সালে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় দেশের এক মাত্র মহিষ মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে বর্তমানে খামারটিতে ৪৬৭টি মহিষ ও বাচ্চা রয়েছে। অযতœ আর অবহেলায় মহিষগুলো রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে এখানে।

বাগেরহাটের ফকিরহাটে অবস্থতি মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের ব্যবস্থাপক ও মালামাল গ্রহন কমিটির সদস্য সচিব ডা. মুহম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছে একটি গ্রুপ আর মাল সর্বরাহ করবে আর একটা গ্রুপ। ঝামেলা কি হয়েছে তা প্রকল্প পরিচালক অফিস জানে। সেই ঝামেলা উত্তরনের পর সময় অতিক্রান্ত হলেও বর্তমানে কিছু পশু খাদ্য এসেছে। তবে, ষ্টোরকিপার মো. জাকারিয়া জানান, তার ষ্টোরে যে পরিমানের পশু খাদ্য রয়েছে তা দিয়ে সর্বোচ্চ ২৫ দিন চালানো যাবে।

এদিকে মালামাল গ্রহন কমিটির সভাপতি ও বাগেরহাট জেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. লুৎফর রহমান জানান, সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরও যে পরিমান মাল পাওয়ার কথা তা পাওয়া যায়নি। বর্তমানে কি পরিমান মালামাল ষ্টকে আছে তা খোঁজ নিয়ে বলতে পারবো।

ঢাকা প্রানি সম্পদ অধিদপ্তরের মহিষ উন্নয়ন প্রকল্পের (২য় পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ডা. মো. রফিকুল ইসলামের মুঠোফোন (০১৬১৫৯২৪০০৯) এর সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

(এসএকে/এসপি/জুলাই ১১, ২০১৯)