নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণের ফলে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে 

এই দুটি নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ১৬ সে.মি. উপরে এবং ধলেশ্বরী নদীর পানি ২৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে নদী তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।

বিশেষ করে গত কয়েকদিনে যমুনা নদীর তীরবর্তী নাগরপুর উপজেলার আগদিঘুলিয়া, নিশ্চিন্তপুর ও পাইকশা মাঝাইল গ্রামে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। অন্যদিকে ধলেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার কাজীবাড়ি ও কেদারপুরে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। আর এতে গৃহহীন হচ্ছে বহু পরিবার। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্র্তৃপক্ষ বলছে আগামী বুধবার পর্যন্ত নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার পাইকশা মাঝাইল, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের শত শত পরিবার যমুনা নদীর ভাঙ্গনে গৃহহীন হয়ে তাদের ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষ পানি ও খাদ্যের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। পাইকশা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমানুল ইসলাম জানান, নদী ভাঙ্গনে হুমকীর মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয়টি। ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে আগামী দুই একদিনের মধ্যে বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

অপরদিকে ধলেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে মোকনা ইউনিয়নের কাজীবাড়ি ও কেদারপুরে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ফসলী জমি ও ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। মোকনা ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান আতোয়ার রহমান কোকা জানান, নদীর পানি অব্যাহত ভাবে বাড়তে থাকলে মানুষের ক্ষয়ক্ষতির পরিমানও বাড়বে। তাছাড়া হুমকীর মধ্যে রয়েছে কাজিবাড়ি মধ্যপাড়া কবরস্থান। আমরা ইতিমধ্যে দূর্গতদের পাশে দাড়িয়েছি।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণের ফলে টাঙ্গাইলের যমুনা ও ধলেশ্বরীর নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ১৬ সে.মি. উপরে এবং ধলেশ্বরী নদীর পানি উপজেলার শামসুল হক সেতুর এখানে বিপদ সীমার ২৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আগামী বুধবার পর্যন্ত এ সব নদীতে পানি বৃদ্ধি পাবে। তবে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে পানি কমতে পারে। আর পানি কমলে ভাঙন আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নদী ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভাঙন রোধে আমরা কাজ করছি এবং কাজ চলমান রয়েছে।

নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম জানান, ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করছে। আমাদের যে সকল উচু প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে সেসব বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আমাদের কাছে পর্যান্ত ত্রাণ সামগ্রী রয়েছে। জনগনকে আতংকিত না হয়ে ধৈর্য্য সহকারে পরিস্থিতি মোকাবেলার আহবান জানিয়ে তিনি আরও বলেন আগামীকাল থেকে পাইকশা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রক্ষায় সেখানে জিওব্যাগ ফেলা হবে।

(আরএস/এসপি/জুলাই ১৬, ২০১৯)