নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সুবর্ণচরে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে চ্যানেল এস টিভির নোয়াখালী দক্ষিণ অঞ্চল প্রতিনিধি, সময়ের কণ্ঠস্বর ডট কমের নিউজরুম এডিটর, দৈনিক নোয়াখালী প্রতিদিনের প্রতিবেদক ও ডেইলি অবজারভার পত্রিকার সুবর্ণচর প্রতিনিধি মো: ইমাম উদ্দিন সুমনের ওপর হামলা করে ২ নং চরবাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একাধিক মামলার আসামি মোজাম্মেল হোসেন মোজাম।

হামলার ঘটনায় চেয়ারম্যান মোজাম্মেলকে প্রধান আসামি এবং অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন সুমন। চরজব্বার থানায় ডায়রি নং ৬১১। হামলার ৭ দিন পার হয়ে গেলেও এখনো কাউকে আটক না করায় (১৯ জুলাই) শুক্রবার চরজব্বার থানা মোড়ে মানববন্ধন করে সবর্ণচর উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ। এছাড়াও মানববন্ধনে অংশ নেয় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক
ফোরাম নোয়াখালী শাখা ও দৈনিক নোয়াখালী প্রতিদিন পাঠক ফোরামের সদস্যবৃন্দ।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সুবর্ণচর উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি লিটন চন্দ্র দাস, সুবর্ণচর প্রেসক্লাব সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম, সিএনএন বাংলা টিভির জেলা প্রতিনিধি সেলিম, সাংবাদিক ছানা উল্যাহ, ইউনুছ শিকদার, ইব্রাহিম খলিল, আলী আক্কাছ, এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক মাবাধিকার
প্রতিদিন প্রতিনিধি অব্দুল্যাহ রানা, সময়ের কণ্ঠস্বর সংবাদদাতা রাসেল প্রমুখ।

বক্তারা অতি দ্রুত অভিযুক্ত মোজাম্মেল চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান।

উল্লেখ্য ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় নোয়াখালীর সুবর্ণচরের ২নং চরবাটা ইউনিয়নের চেয়রম্যান মোজাম্মেল হোসেন’র বাড়ির কেয়ারটেকার ইসমাইল (৪৮), এর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে, কেয়ারটেকারের মৃত্যুর সংবাদ সংগ্রহ করতে সাংবাদিক মোহাম্মদ ইমাম উদ্দিন সুমনের ওপর হামলা চালিয়েছে ২নং চরবাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা চরজব্বর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাহেদ উদ্দিন চৌধুরী মোজাম্মেল চেয়ারম্যানকে ধাক্কা দিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় নিন্ধা জানিয়েছে নোয়াখালী জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ, ইতিপূর্বে ফেনীর সোনাগাজি, চট্রগামসহ দেশের একাধিক স্থানে সুমনের ওপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধন করে সাংবাদিকরা।

থানা সূত্রে জানা যায়, নিহত ইসমাইল হোসেন (৪০) হাতিয়া উপজেলার বয়ারচর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের সফি উল্যাহর পুত্র। এ বিষয়ে

ভুক্তভোগী সাংবাদিক সুমন জানান, কেয়ারটেকারের মৃত্যুর সংবাদ সংগ্রহ করতে ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেনের বাড়িতে গেলে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান মোজাম্মেলনসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারে । ঘটনাস্থল থেকে আসার পর ০১৮৩১৯৪৭১৩৪ নম্বরসহ একাধিক নাম্বার থেকে আমাকে গুম ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এব্যাপারে সুমন বাদী হয়ে চরজব্বার থানায় একটি মামলা করেন।

এ বিষয়ে বাড়ির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন দাবি করেন, তার বাড়ির কেয়ারটেকারের বিদ্যুৎপৃষ্ট মৃত্যু হয়েছে। সাংবাদিকের উপর হামলা বিষয়ে প্রশ্ন করার সাথে সাথে তিনি মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন।

এ বিষয়ে চরজব্বর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাহেদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছি কেয়ারটেকারের বিদ্যুৎপৃষ্টে মৃত্যু হয়েছে। যেহেতু এ মৃত্যু দিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমরা লাশ উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করি। ময়না তদন্তে রিপোর্ট হাতে পেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। আপনার সামনে সাংবাদিক’র উপর হামলা হয়েছে? এমন প্রশ্ন করলে ওসি বলেন, আমার সামনে হামলা হয়নি। আমি দেখেছি কথা কাটাকাটি হয়েছে। অভিযুক্ত মোজাম্মেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কর্তন, অবৈধ বালু উত্তলন, স্কুল ছাত্রীকে পিটানো, বিচার প্রার্থী নারীকে ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রেখে রাতভর ধর্ষণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তার এমন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে ২নং চরবাটা ইউনিয়নের সকল ইউপি সদস্য তাকে অপসারনের দাবীতে লিখিত অভিযোগ করেন। এতসব অপকর্মের পরেও বহাল তবিয়তে রয়েছে অভিযুক্ত মোজাম্মেল চেয়ারম্যান। এ রির্পোট লোখা পর্যন্ত এখনো কোন আসামি গ্রেফতার হয়নি

(এস/এসপি/জুলাই ১৯, ২০১৯)