আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানের তত্বাবধানে জন্ম নেয়া সেই পাগলীর কন্যা ফাতেমার ঠাঁই হয়েছে নিঃসন্তান প্রভাষক দম্পত্তির ঘরে। সন্তান দত্তক নেয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে বরিশাল শিশু আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ ৭৪/১৯নং মিস পিটিশন কেসে এক লাখ টাকা বন্ডে গত ১৭ জুলাই আগৈলঝাড়া বেবী হোমে আশ্রিত শিশু ফাতেমাকে মু. নুরনবী সিদ্দিকী ও রেহানা আক্তার দম্পত্তির কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন।

আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার বিকেলে আগৈলঝাড়ায় অবস্থিত বরিশাল বিভাগীয় বেবী হোমের উপ-তত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ সাড়ে ছয়মাস বয়সী শিশু ফাতেমাকে আদালতের নির্দেশিত মু. নুরনবী সিদ্দিকী ও রেহানা আক্তার দম্পত্তির কাছে হস্তান্তরের করেন। এসময় বরিশাল জেলা প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ উপস্থিত ছিলেন। মু. নুরুনবীর ঝালকাঠির বাসিন্দা ও বরিশাল একটি কলেজের ইসলামী ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক। তার স্ত্রী গৃহিনী। ফাতেমাকে হাফেজ বানানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন এই দম্পত্তি।

প্রসংগত, চলতি বছর ১৪ জানুয়ারি পটুয়াখালী জেলা সদরের কমলাপুর এলাকায় প্রসব বেদনায় ছটফট করা মানসিক ভারসাম্যহীন অন্তস্বত্তা নারীকে সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান নিজের গাড়িতে তুলে নিয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। ওই দিন সন্ধ্যায় কন্যা সন্তান জন্ম দিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় মানসিক ভারসাম্যহীন ওই প্রসুতি মা। অনেক খুঁজেও শিশুটির মা’কে না পেয়ে অভিভাকের দায়িত্ব নেন ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।

হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ২৭ জানুয়ারি শিশুটিকে পটুয়াখালী সমাজসেবা অধিদদফতরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরিচয়হীন এই নবজাতকের পরিচয় নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়ায় ওসি মোস্তাফিজুর রহমান তার মৃত মায়ের নামে শিশুটির নাম রাখেন “ফাতেমা রহমান।” পটুয়াখালী জেলা সমাসেবা কার্যালয়ের হিসাব সহকারী সিদ্দিকুর রহমান ও হাসপাতালের একজন নার্স চলতি বছর ৩০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে শিশু ফাতেমাকে আগৈলঝাড়ায় বিভাগীয় বেবী হোমে হস্তান্তর করেন। সেই থেকে ফাতেমা বেবী হোমে বড় হতে থাকে।

(টিবি/এসপি/জুলাই ১৯, ২০১৯)