আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় শ্রীমতি মাতৃ মঙ্গল বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শেণি পড়ুয়া স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে থানায় যেতে দেয়নি স্থানীয় মাতুব্বররা। মাতুব্বরদের চাপের মুখে শিক্ষার্থীর পরিবারকে বাধ্য করে প্রহসনের শালিশ বৈঠকে অভিযুক্তকে জুতাপেটা। 

বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় তার অস্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় পাশ্ববর্তী বাড়ির ভ্যান চালক শ্যামল মল্লিকের বখাটে ছেলে পলাশ মল্লিক। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে তার মেয়ের শ্লীলতাহানি ঘটায়। মেয়ের ডাক চিৎকারে প্রত্যক্ষদর্শী পাশের বাড়ির নিকোলাস সরকার দৌড়ে এসে তার মেয়েকে পলাশের হাত থেকে উদ্ধার করে।

রাতে মেয়ের বাবা বাড়ি ফিরলে মেয়ে ও প্রতিবেশীদের মুখে শুনে আইনের আশ্রয়ে যাবার কথা জানালে স্থানীয় মাতুব্বররা বিচার শালিশ করে দেয়ার কথা বলে থানায় যেতে বারণ করে দেয়। মাতুব্বরদের চাপের কারণে ভুক্তভোগী বাবা আইনের আশ্রয় নিতে পারেন নি।

ওই ঘটনা এলাকায় জানাজানির পর শুক্রবার বিকেলে প্রহসনের শালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।ওই শালিশ-বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় মাতুব্বর আব্দুর রব হাওলাদার কালাই, মার্সেল হাওলাদার, রনজিত কর, প্রত্যক্ষদর্শী নিকোলাস সরকারের ছেলে সুশান্ত সরকার, অভিযুক্ত পলাশের কাকা হরবিলাস মল্লিক। শালিশ বৈঠকে পলাশের কাকা হরবিলাস মল্লিক পলাশকে অভিযুক্ত করে জুতা পেটা করেন।

শালিশ বৈঠকে উপস্থিত একটি সুত্র জানায়, মেয়ের বাবাকে চাপের মুখে রেখে প্রকাশ্যে কোন বিচার না করে শালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শালিশদার আব্দুর রব হাওলাদার কালাই জানান, তিনি শালিশ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। তবে বিষয়টি তিনি জানেন বালে জানান। তিনি আরও বলেন ইউপি চেয়ারম্যানও জানেন।

এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ঠ রাজিহার ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ঘটনা জেনে এসআই দোলোয়ার হোসেনকে জানিয়েছেন। নারী ও শিশু নির্যাতনের কোন ঘটনা শালিশ যোগ্য নয় বলে জানিয়ে ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।

এসআই দেলোয়ার হোসেন বলেন, এরকম কোন ঘটনা তাকে কেউ জানায় নি। সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে ঘটনা জানতে পেরে মেয়ের বাবার সাথে কথা বলেছেন তিনি। মেয়ের বাবা তার অভিভাবক ও মাতুব্বরদের নিয়ে থানায় আসবেন বলে তাকে জানিয়েছেন।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন জানান, এরকম কোন বিষয় তার জানা নেই। তবে মেয়ের পরিবার অভিযোগ নিয়ে আসলে আইনগত প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।

শ্রীমতি মাতৃ মঙ্গল বালিকা বিদ্যলয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, কোন মাধ্যমেই তিন এমন খবর পাননি। তবে এখন তিনি খোঁজ খবর নিয়ে চৌকিদার পাঠিয়ে মেয়ের পরিবারের সাথে কথা বলাবেন। তারা আইনগত সহযোগীতা চাইলে তাদের সর্বাত্বক সহযোগীতা প্রদান করা হবে।

(টিবি/এসপি/জুলাই ২০, ২০১৯)