মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে টানা হেঁচড়ায় পৃথিবীর আলো দেখার আগেই মায়ের গর্ভে নবজাতকের মৃত্যু আলোচিত ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঐ হাসপাতালেরই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শনিবার (২০ জুলাই) সকালের দিকে সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা: সুব্রত কুমার রায়কে প্রধান করে ডা: আবু রায়হান ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা: রেজাউল করিম মীরসহ তিনজন বিশেষজ্ঞ নিয়ে করা এই তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের
তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ পার্থ সারথি দত্ত কানুনগো।

তিনি বলেন, ঘটনাটি গণমাধ্যমে আসায় আমরা নিজেরাই এর সুষ্টু কারন জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তিনি আরো বলেন নার্সরা নয় সেখানে গাইনী বিভাগের চিকিৎসক ডা: ফারজানা হক রুজি , ডা: ইসমাত জাহান ও ডা: রওশন আরা জামানসহ তিনজন গাইনী চিকিৎসক ছিলেন। তবে গাইনী চিকিৎসক ডা: রওশন আরা জামান দাবী করে বলেন মাতৃগর্ভে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয় শিশুটিকে।

তিনি বলেন, আমরা যখন বাচ্চাটাকে বের করার চেষ্টা করি তখন তার গায়ের চামরা উঠে যাচ্ছিল, সাথে সাথে গন্ধ বের হওয়ায় আমরা নিশ্চিত হই বাচ্চার মৃত্যুর বিষয়টি।

সূত্রে জানা যায় , নবজাতক মৃত্যুর গুরুতর অভিযোগ উঠে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সদের বিরুদ্ধে। প্রথমে নির্দয় এই ঘটনাটি নিরবে ঘটলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরবর্তিতে ভাইরাল হলে তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠে সোস্যাল মিডিয়া সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

গত ১৪ জুলাই রবিবার সকালে জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার কুমরাকাপন গ্রামের আউয়াল হাসান তার গর্ভবর্তী স্ত্রী সুমনা বেগমকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের গাইনী বিভাগে ভর্তি করান। এসময় সেখানের দায়িত্বরত নার্সরা সুমনার অবস্থা দেখে প্রথমে নরমাল ডেলিভারী কথা বলে, পরে সিজারের পরামর্শ দেন। সিজারের জন্য ১ ব্যাগ রক্ত ও ঔষধ নিয়ে আসার কথাও বলেন। নার্সদের পছন্দের ফার্মেসী থেকে ঔষধ ও রক্ত কিনে আনার জন্য আউয়াল হাসানের সাথে নাসর্রা তাদের মনোনীত একজন লোক দেন। কিন্তু আওয়াল নার্সের দেয়া লোককে বিদায় করে তুলনা মূলক কম দামে অন্য ফার্মেসী থেকে ঔষধ ও রক্ত নিয়ে এসে দেখেন নার্সরা নরমাল ডেলিভারীর কথা বলে সুমনাকে তার শাশুড়ি আছিয়া বেগমের কাছ থেকে ডেলিভারী কক্ষে নিয়ে গেছেন।

২০ মিনিট পরে একজন নার্স এসে আওয়ালকে বলেন আপনার বাচ্চা মারা গেছে। স্ত্রীকে বাঁচাতে হলে সিলেট উসমানী হাসপাতালে নিয়ে যান। একথা বলে নাসর্রা সবাই ওখান থেকে সটকে পড়েন। এসময় আওয়াল স্ত্রী ও বাচ্চার (অর্ধেক ভিতরে ও বাহিরে) অবস্থার অবনতি দেখে চিৎকার করলে সুয়েব নামের ঐ হাসপাতালে কর্মরত এক স্টাফ আওয়ালকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন এবং বলেন এখানে চিৎকার করার জায়গা নয়, বাহিরে গিয়ে চিৎকার কর। তখন আওয়াল স্ত্রীকে বাঁচাতে প্রথম শহরের নূরজাহান প্রাইভেট হাসপাতলে নিয়ে যান। নূরজাহান কর্তৃপক্ষের ধারা এটা সম্ভব না হলে পরে পুরাতন হাসপাতল রোডস্থ আল-হামরা প্রাইভেট হাসপাতালে সুমনাকে নিয়ে আসেন। সেখানে ঐদিন বিকাল ৫টায় ডাঃ হাদী হোসেন অপারেশন করে মৃত (মেয়ে) বাচ্চা বের করেন।

(একে/এসপি/জুলাই ২০, ২০১৯)