মোবাশ্বের আহমেদ, বেরোবি প্রতিনিধি : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি সম্মেলনের দুই বছরেও। দুই সদস্য বিশিষ্ট মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কার্যক্রম। ফলে চরম বিভক্তি দেখা দিয়েছে নেতাকর্মীদের মাঝে।

সংগঠন সূত্র জানা যায়, ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের প্রথম সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। পরদিন (৫ এপ্রিল) আবু মোন্নাফ আল তুষার কিবরিয়াকে সভাপতি ও কামরুল হাসান নোবেল শেখকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য দুই সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক জাকির হুসাইন।

দুই বছর আড়াই মাস পার হলেও পূণাঙ্গ হয়নি সেই কমিটি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পদ প্রত্যাশীরা বলেন, চার-পাঁচ বছর ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেও পদ-পদবি ছাড়াই পড়াশোনা শেষ করে ক্যাম্পাস ছাড়তে হচ্ছে। কেন্দ্র থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না করতে পারায় বিদ্যমান কমিটির সভাপতি-সম্পাদককেই দায়ী করছেন তারা।

এদিকে, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি ঘোষণার দাবিতে সরব হয়েছেন সাবেক কমিটির একাধিক নেতা। ছাত্রলীগের ওই অংশ ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সবাপতি-সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। তারা সভাপতি-সম্পাদকের বাইরে আলাদা করে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। এ অংশের নেতৃত্বে আছেন সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফয়সাল আজম ফাইন, সাবেক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল হোসেন, বঙ্গবন্ধু হল শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মৃতীশ চন্দ্র বর্মণ।

সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস ফয়সাল আজম ফাইন বলেন, ‘কমিটি পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে, হবে, বলেই দুই বছর পার করলেন বর্তমান কমিটির সভাপতি-সম্পাদক। কিন্তু কবে হবে কমিটি? কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছে না। তাই আমাদের দাবি এ ব্যর্থ কমিটি বাতিল করে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করা।’ তবে বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া বলেন কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে তাদের আন্তরিকতার কোনো কমতি নেই। প্রায় ১০ মাস আগে কমিটি পূর্ণাঙ্গ তারা তালিকা জমা দিয়েছি কেন্দ্রীয় কমিটিকে।

ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানায়, কমিটি পূর্ণাঙ্গ না থাকায় যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেই অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের ‘কেউ না’ বলে সহজেই দায় এড়িয়ে যান শাখা ছাত্রলীগ নেতারা। এজন্য হতাশ হয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন না নেতাকর্মীরা। তাছাড়া কমিটির সাংগঠনিক নিস্ক্রিয়তায় ছাত্রলীগে বাড়ছে শিবির-ছাত্রদলের সহজ অনুপ্রবেশ। তাই অনুপ্রেবেশ ঠেকাতে দ্রুত কমিটি ঘোষণার দাবি নেতাকর্মীদের।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া বলেন, ‘ছাত্রলীগ অত্যন্ত সুসংগঠিত একটি সংগঠন। তাই এতে বিভক্তির সুযোগ নেই। কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার দায়িত্ব সেন্ট্রাল প্রেসিডেন্ট নিয়েছেন। আশা করছি, দ্রুতই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে।’

(এম/এসপি/জুলাই ২০, ২০১৯)