নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : যমুনা-ধলেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে টাঙ্গাইলের নাগরপুরের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। এ দুই নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে উপজেলা সদরের বিভিন্ন পয়েন্টে পানি ঢুকে পড়েছে।

উপজেলা ত্রাণ ও দূর্যোগ অফিসের তথ্যমতে যমুনা ধলেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধিতে সৃষ্ট বন্যায় নাগরপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত ৫০ হাজার লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

উপজেলার কলমাইদে বন্যার পানিতে ডুবে কলমাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণীর শিশু শিক্ষার্থী রাকিবুলের মৃত্যু হয়েছে। সে কলমাইদ গ্রামের আমিনুরের ছেলে।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, বন্যায় উপজেলার বিভিন্ন পুকুর, জলাশয় এবং খামারের মাছ ভেসে এবং পাড় ভেঙে প্রায় কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বন্যার কারণে উপজেলার ৬৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ওঠায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে এবং অনেক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

এদিকে সলিমাবাদ-ধুবড়িয়া সড়কের তেবাড়িয়া কালীবাড়ি সামনের বেইলী ব্রিজ বন্যার পানির স্রোতে ভেঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া নাগরপুর-চৌহালী, নাগরপুর-ধল্লা, নাগনপুর-বাটরা সড়ক সহ নাগরপুর উপজেলার সাথে বিভিন্ন ইউনিয়নের সংযোগ সড়কে বন্যার পানি উঠে সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ঝুকিতে রয়েছে টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক মহাসড়ক ও নাগরপু-মির্জাপুর ভায়া মোকনা সড়ক। এসকল সড়কে বন্যার পানি উঠে যেকোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে ঢাকার সাথে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা।

বন্যার পানিতে অনেকের বীজতলা, সবজি ও পাটের আবাদ তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এদিকে বন্যা দূর্গত চরাঞ্চল এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি, গো খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি উঠায় অনেকেই ঘর বাড়ি ছেড়ে উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।

বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, প্লাবিত এলাকায় আমি সরেজমিনে গিয়ে বন্যার্ত মানুষের সাথে কথা বলেছি। তাদের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে উঠার পরামর্শ দিয়েছি। এছাড়া তাদের মাঝে শুকনো খাবার, চাল, ডাল বিতরন করেছি। তিনি ধৈর্য্য সহকারে পরিস্থিতি মোকাবেলার আহবান জানান।

(আরএস/এসপি/জুলাই ২০, ২০১৯)