স্টাফ রিপোর্টার : দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে ব্যাংকার্স সভায় ডেপুটি গভর্নরসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারাও অংশগ্রহণ করবেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম।

বৈঠকে ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট, ঋণ ও আমানতের অনুপাত (এডিআর) সমন্বয়, খেলাপি ঋণ কমানো, নয়-ছয় সুদহার বাস্তবায়ন ও খেলাপিদের ঋণ পুনঃতফসিলের বিশেষ সুবিধাসহ ব্যাংক খাতের চলমান সংকট নিয়ে আলোচনা হবে।

ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কয়েক দফা সময় বাড়ানোর পর আগামী সেপ্টেম্বরে এডিআর সমন্বয়ের সময়সীমা শেষ হচ্ছে। কিন্তু অনেক ব্যাংক এখন পর্যন্ত তাদের নির্ধারিত মাত্রায় ঋণ সমন্বয় পারেনি। এ বিষয়ে আলোচনা হবে।

এছাড়া নানা সুযোগ-সুবিধা দেয়ার পরও ব্যাংকের সুদহার কমানো যাচ্ছে না। কেন যাচ্ছে না? এই বিষয়ে কী করণীয় তা জানতে চাওয়া হবে। কারণ এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ মহলের চাপ রয়েছে।

তারা বলেন, বর্তমানে খেলাপি ঋণ লাগামহীনভাবে বেড়ে গেছে খেলাপি ঋণ কীভাবে কমানো যায়। পাশাপাশি খেলাপিদের দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ৯ শতাংশ সুদহারে ঋণ পুনঃতফসিলের বিশেষ সুবিধা দুই মাসের জন্য কার্যকর করা হয়েছে। এ সুবিধার যেন অপব্যবহার না হয় সেই বিষয়ে সতর্ক করা হবে। এছাড়া নতুন অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন এক টাকাও খেলাপি বাড়বে না।

এছাড়া নতুন আমানত সংগ্রহ, খেলাপি ঋণ কমানোসহ ২০১৯-২০ অর্থবছরের নতুন মুদ্রানীতি বিষয়ে আলোচনা হবে বলে একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এর আগে গত বছরের জুনে ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয় বেসরকারি ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যা গত বছরের ১ জুলাই থেকে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে ঋণ এবং ছয় শতাংশ সুদে তিন মাস মেয়াদি আমানত নেয়া হবে। কিন্ত এক বছর পার হলেও তা বাস্তবায়ন করেনি কোনো ব্যাংক।

এদিকে নতুন সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামাল দায়িত্ব নেয়ার পরই ঘোষণা দেন খেলাপি ঋণ এক টাকাও বাড়বে না। এ রকম ঘোষণা সত্ত্বেও গত মার্চ প্রান্তিক শেষে রেকর্ড পরিমাণে খেলাপি ঋণ বেড়ে এক লাখ ১০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা হয়েছে। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ছিল ৯৩ হাজর ৯১১ কোটি টাকা। তিন মাসে বেড়েছে ১৬ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। এর আগে এক প্রান্তিকে এত বেশি খেলাপি ঋণ বাড়েনি।

দেশের ব্যাংক খাতের সামগ্রিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন ও দিকনির্দেশনা ঠিক করতে তিন মাস পরপর এমডিদের নিয়ে ব্যাংকার্স সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২১, ২০১৯)