হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : হালুয়াঘাট সদর ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিভাজন ও ভোটার তালিকা প্রণয়নে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ওয়ার্ড বিভাজন ও ভোটার তালিকা প্রণয়নে বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশিত গেজেট অমান্য করে ওয়ার্ড বিভাজন ও খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

জানা যায়, গত ২০১৪ সনের ৩ সেপ্টেম্বার তৎকালীন প্রয়াত সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন এমপি আনন্দ শোভাযাত্রায় হালুয়াঘাট পৌরসভার উদ্ভোধন করেন। এ সময় হালুয়াঘাট সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড ভেঙ্গে পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীত্বে হালুয়াঘাট সদর ইউনিয়নকে ৯টি ওয়ার্ডে বিভাজন ও ১৪টি মৌজার নাম এবং ১৫টি গ্রাম অর্ন্তভুক্ত করে গত ২০১৮ সনের ১০ জুন ৩১.৩০.৬১৮১.১৪৭.৫৫.০০১.১৮-২৪৯ স্বারক মূলে তৎকালীন সহকারী কমিশনার ভূমি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে ওয়ার্ড বিভাজন ও খসড়া ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়। যা গত ২০০৯ সনের ১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশিত গেজেটের ৭০১৩ নং পৃষ্টায় গ অনুছেদের ১৩ নং ধারার সাথে কোন প্রকারের মিল নেই।

গেজেটে উল্লেখ রয়েছে ওয়ার্ড বিভাজনে সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভৌগলিক অখন্ডতা এবং জনসংখ্যার বিন্যাস ও প্রশাসনিক সুবিধাদির প্রতি লক্ষ্য রাখিতে হইবে, যাহাতে একটি ওয়ার্ডের লোকসংখ্যা অন্য একটি ওয়ার্ড হইতে ১০% এর কম বা বেশী না হয়। কিন্তু ওয়ার্ড বিভাজনে ও সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম। একটি ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা থেকে অন্য ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা দ্বিগুনেরও বেশী রয়েছে।

যেমন, ১ নং ওয়ার্ড পশ্চিম গোবড়াকুড়া যার ভোটার সংখ্যা ২২৫২, ২নং ওয়ার্ড পূর্বগোবরাকুড়া যার ভোটার সংখ্যা ৩৮৭৪, ৩নং ওয়ার্ড দক্ষিণ মনিকুড়া ভোটার সংখ্যা ৪১৬৭, ৪নং ওয়ার্ড আকনপাড়া যার ভোটার সংখ্যা ৩৭৮৬, ৫নং ওয়ার্ড বিড়ইডাকুনী যার ভোটার সংখ্যা ১৬৭৪, ৬নং ওয়ার্ড পশ্চিম কায়লানীকান্দা ভোটার সংখ্যা ২২৮১, ৭নং ওয়ার্ড পূর্বকায়লানীকান্দা ভোটার সংখ্যা ২৩৫৪, ৮নং ওয়ার্ড খন্দকপাড়া যার ভোটার সংখ্যা ১৬১৬ এবং ৯নং ওয়ার্ড রঘুনাথপুর যার ভোটার সংখ্যা ১১৬১ জন। সর্বমোট ২৩ হাজার ১ শত ৩৭ জন ভোটারের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়।

প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা ও ওয়ার্ড বিভাজনে বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশিত গেজেট অমান্য করা হয়। দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ সঠিক ভাবে ওয়ার্ড বিভাজন ও সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে অনিয়ম করে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করায় স্থানীয় ভোটারদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। ভোটারদের অভিযোগ ওয়ার্ড বিভাজন ও ভোটার তালিকা প্রণয়নকারীগণ অফিসে বসে ওয়ার্ড বিভাজন ও ভোটার তালিকা প্রনয়ণের কারণে একটি ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডের প্রায় ৭০% ভোটার বেশী করে বৈশম্য মূলক ওয়ার্ড বিভাজন করা হয়েছে। শিঘ্রই প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান স্থানীয় ভোটারগণ।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কমকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ঢালী বলেন,সম্প্রতি হালুয়াঘাট সদর ইউনিয়নের ২৩ হাজার ১ শত ৩৭ জন ভোটারের একটি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছেন আগামী ৩০ জুলাই খসড়া ভোটার তালিকা সংশোধনীর কাজ সমাপ্ত করা হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে বৈশ্যম্যমূলকভাবে ওয়ার্ড বিভাজন করায় তাদের কিছু করার নেই। খসড়া ভোটার তালিকায় বাদ যাওয়া ভোটারদের নিধারিত সময়রে মধ্যো আবেদন করার আহব্বান জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, সম্প্রতি হালুয়াঘাট সদর ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিভাজন ও ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য একটি আপত্তি পেয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় ও নির্বাচন কমিশনের সিদান্তের উপর নিরর্ভরশীল। উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ যে ভাবে নির্দেশ প্রদান করবেন সে মোতাবেক কাজ করা হবে বলে জানান।

(জেসিজি/এসপি/জুলাই ২১, ২০১৯)