গাইবান্ধা প্রতিনিধি : চলতি বন্যা মৌসুমে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানির তোড়ে তলিয়ে গেছে রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার প্রায় ৩১ হাজার পুকুর। এতে অন্তত ২৩ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

হঠাৎ বন্যার পানি ফুলে ফেঁপে উঠায় ভেসে গেছে ছোট-বড় মাছ ও পোনা উৎপাদনকারী পুকুরের মাছ। অপূরণীয় এমন ক্ষতিতে মাথায় হাত উঠেছে মৎস্য চাষিদের।

রংপুর ও গাইবান্ধা জেলা মৎস কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র এ তথ্য জানায়।

জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহের বন্যায় নদীবেষ্টিত রংপুর ও গাইবান্ধায় তিস্তা, ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্রসহ ছোট ছোট নদে পানি থৈ থৈ করছে। রংপুরে বন্যা পরিস্থিতর উন্নতি হলেও গাইবান্ধায় বন্যার পানি চর, দ্বীপচর, নিম্নাঞ্চল ছাপিয়ে শহরে প্রবেশ করেছে।বর্তমানে এ দুই জেলার ছোট-বড় মাছ ও পোনা উৎপাদনকারী মৎস চাষির অন্তত ৩১ হাজার পুকুর ও খাল পানির নিচে আছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা জেলায় ৩০ হাজার এবং রংপুরের গঙ্গাচড়া, পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলার মোট ৫৮২টি পুকুর রয়েছে। গেল কয়েকদিনের বন্যায় পুকুর ডুবিতে এই দুই জেলাতে ২২ কোটি ১০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে রংপুর জেলার তিন উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গঙ্গাচড়ার মৎস চাষিরা। এ উপজেলায় বন্যায় ভেসে যাওয়া পুকুরের সংখ্যা ৪৯৫টি। ভেসে যাওয়া মাছের পরিমাণ ৭৫ দশমিক ৮০ মেট্রিক টন, যার মূল্য প্রায় এক কোটি ৩৬ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। ভেসে গেছে আরও চার লাখের বেশি পোনা। অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ লাখ ৫৫ হাজার টাকার।

এছাড়া কাউনিয়া উপজেলায় ৫০টি পুকুর থেকে বন্যায় ৪ দশমিক ২৭ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে। যার অনুমানিক মূল্য প্রায় সাত লাখ ১৫ হাজার টাকা। এখান থেকে ভেসে গেছে ৫৮ হাজারের বেশি পোনা। অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার টাকার।অন্যদিকে, পীরগাছা উপজেলায় বন্যায় ৩৭টি পুকুর থেকে ৬ দশমিক ৬৬ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে। যার মূল্য প্রায় সাত লাখ ৬২ হাজার টাকা। অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক লাখ ৩১ হাজার টাকা।

এদিকে শুধু বানের জলে পুকুরডুবিতে মৎস চাষিদেরও মাথায় হাত উঠেনি। ক্ষতি হয়েছে ফসলি জমিও। শুধু গাইবান্ধাতেই পানিতে তলিয়ে গেছে ১০ হাজার হেক্টর ফসলের ক্ষেত। আমন বীজতলা, পাট, সবজি ক্ষেত সবই ধুয়ে মুছে নিয়ে গেছে প্লাবন। ক্ষতির পরিমাণ ভয়াবহ হওয়ায় বন্যা পরবর্তীতে ঘুরে দাঁড়াতে হিমশিম খেতে হবে কৃষক আর মাছ চাষিদের।

(এস/এসপি/জুলাই ২১, ২০১৯)