স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তির প্ররোচনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করেছেন কি না- তদন্তের মাধ্যমে তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে ধর্মভিত্তিক দুটি সংগঠন। এ ছাড়া প্রিয়া সাহার সঙ্গে প্ররোচনাকারীদেরও বিচারের দাবি জানানো হয়েছে।

রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোমবার (২২ জুলাই) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে হিন্দু-বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট যৌথভাবে এ আহ্বান জানায়।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত পাল বলেন, ‘প্রিয়া সাহার বক্তব্য দেশের শুভবোধসম্পন্ন সব মানুষের আবেগ ও অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। দেশের সব মানুষ তার এ অপকর্মের ধিক্কার ও নিন্দা জানাচ্ছে। প্রিয়া সাহার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্ররোচনাকারী গোষ্ঠী-ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি।’

প্রিয়া সাহার বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা কি না- জানতে চাইলে সুব্রত পাল বলেন, ‘অবশ্যই। আমরা মনে করি এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। তার বক্তব্যের তদন্ত সাপেক্ষে আমরা তার বিচার দাবি করি।’

আবার পরক্ষণেই তিনি বলেন, ‘তার বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহী কি না- তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে, সরকার আছে, তাদের তদন্ত সাপেক্ষে আমরা বিচার দাবি করি।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রিয়া সাহা বলেছিলেন, ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। সেখানে ৩৭ মিলিয়ন (৩ কোটি ৭০ লাখ) হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান উধাও হয়ে গেছে। এখনও সেখানে ১৮ মিলিয়ন (১ কোটি ৮০ লাখ) সংখ্যালঘু জনগণ রয়েছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ত্যাগ করতে চাই না। আমি আমার ঘর হারিয়েছি, আমার জমি নিয়ে গেছে। আমার ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সে সবের কোনো বিচার নেই।’

প্রিয়া সাহাকে ট্রাম্প জিজ্ঞাসা করেন, এসব কারা করছে? জবাবে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘উগ্রবাদী মুসলিমরা এ কাজ করছে। সবসময় তারা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে এ কাজ করে।’

এ বিষয়ে সুব্রত পাল বলেন, ‘ট্রাম্পের কাছে করা প্রিয়া সাহার এ অভিযোগ বাস্তবসম্মত নয়। ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ধর্মের মানুষ উধাও হয়েছে, এ তথ্য বানোয়াট, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের কাছে বিচার চাওয়া গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমরা সম্মিলিতভাবে প্রিয়া সাহার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস-চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া, খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও সচিব নির্মল রোজারিওসহ সংগঠন দুটির অন্য নেতাকর্মীরা।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২২, ২০১৯)