সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গ্রামের গরীব দুঃখী ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা মা বাবার আশ্রয়ে থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ পায় সেই কলেজের টিনসেড ভবন জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে।

কেন্দুয়া কলেজটি সরকারি হলেও গত ১০ বছরে একটি ইটও নতুন লাগেনি এই কলেজটিতে। সরকারি কলেজের জরাজীর্ণ সেই টিনসেড ভবনেই ছাত্র-ছাত্রীরা দাড়িয়েও ক্লাস করছে। একটি ক্লাসে সুষ্ঠুভাবে পাঠদানের জন্য ৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী থাকার কথা। কিন্তু একাডেমিক ভবন না থাকায় একটি ক্লাসে ৩ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী একসঙ্গে দাড়িয়েই ক্লাস করছে। এতে শিক্ষা গ্রহণের কার্যক্রম সঠিক ভাবে হচ্ছেনা।

স্বাধীনতা উত্তর এই কলেজ প্রতিষ্ঠার পর যে টিনসেড ভবন স্থাপন করা হয়েছিল পরবর্তী সময়ে একটি প্রশাসনিক ভবন নির্মান ছাড়া আর তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। অথচ এবছর এখন পর্যন্ত একাদশ শ্রেনীতে মানবিক শাখায় ৮শ ২০, বিজ্ঞান শাখায় ৩১, বাণিজ্য শাখা ৩৭ ও বি.এম শাখা ২৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। এই ভর্তি কর্যক্রম ৩০ জুলাই পর্যন্ত চলবে।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীর পরিমান একই রকম। এছাড়া ডিগ্রী ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা রয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি। অনার্স খোলা হয়েছে বাংলা, রাষ্ট্র বিজ্ঞান, সমাজকর্ম, দর্শন, ইতিহাস ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে। প্রতি শ্রেনীতে ৪৫জন করে ১ হাজার ৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী অনার্সেও রয়েছে। কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা রয়েছে ৬৮ জন। বর্তমান বৃষ্টির দিনে কলেজের চালচুয়ে বৃষ্টি পরে। ছাত্র অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে গ্রামের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করানোর ইচ্ছা নিয়ে কেন্দুয়া সরকারি কলেজে ভর্তি করে। কিন্তু কেন্দুয়া কলেজে যে ৩টি টিনসেড একাডেমিক ভবন রয়েছে, ছাত্র-ছাত্রী অনুপাতে এরকম আরো ৩টি ভবনের দরকার। কলেজের শিক্ষকরা কেন্দুয়া সরকারি কলেজে অন্ততপক্ষে ৩টি একাডেমিক পাকা ভবন নির্মান করার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছেন। কলেজের অধ্যক্ষ উত্তম কুমার কর জানান, ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হচ্ছে ঠিকই কিন্তু তাদেরকে সুষ্ঠুভাবে পাঠদানের জন্য যে একাডেমিক ভবন থাকা দরকার তার কোনকিছুই নেই। নেই একটি হলরোম যে কারনে কোন অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়না।

তিনি বলেন, আমাদের কালেজে যেসব শিল্পী আছে তারা অত্যন্ত বড়মাপের শিল্পী। যে সব ফুটবল খেলোয়ার আছে তাদেরকে সুষ্ঠুভাবে খেলে কেউ হার মানাতে পারবে তা আমি বিশ্বাস করিনা।

তিনি বলেন, কলেজের একাডেমিক ভবনের কারনে এখন ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে লজ্জায় মুখ লাল হয়ে আসে। কারন ছাত্র-ছাত্রীরা দাড়িয়েও ক্লাস করে। এর চেয়ে লজ্জার আর কি আছে। তিনি সরকারের নিকট গ্রামের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে স্থানীয় সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের মাধ্যমে একটি আবেদন শিক্ষামন্ত্রী বরাবর কিছুদিন আগে জমা দিয়েছেন বলে জানান। তিনি আশা করেন এই আবেদনের মাধ্যমে অসীম কুমার উকিল কলেজের একাডেমিক ভবনের যথাযথ উন্নয়ন করবেন।

(এসবি/এসপি/জুলাই ২৪, ২০১৯)