নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীর বেরিবাঁধ ভেঙ্গে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির আবাদ। পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্ন।

বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে জেলার মান্দা, ধামইরহাট, আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলার ৩ হাজার ২৩০ হেক্টর জমির বিভিন্ন প্রকারের ফসল। এতে করে বর্তমানে জেলার কৃষকদের মাথায় হাত উঠেছে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সরকারি ভাবে সহায়তার কোন বার্তা নেই। নওগাঁর ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ৬টি নদী।

তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আত্রাই ও ছোট যমুনা নদী। সম্প্রতি এই দুই নদীর বেরিবাঁধ ভেঙ্গে জেলার মান্দা, ধামইরহাট, আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলার কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। আউশ-আমন ধানের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ধানের বীজতলা, মরিচ, পটলসহ বিভিন্ন সব্জিরক্ষেত ও অন্যান্য ফসলের মাঠ। এতে করে চরম ক্ষতির মধ্যে পড়েছে বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকরা।

বন্যার পানি ফসলের জমি থেকে নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মরে যাচ্ছে মরিচ, করলা, পটল ও ঝিঙ্গেসহ অন্যান্য ফসলের গাছ। পাট ক্ষেতে বন্যার পানি জমে থাকার কারণে পচে যাচ্ছে পাট। এই আবাদগুলোই কৃষকদের একমাত্র সম্বল। এই ক্ষেতের আবাদের ওপরই চলতো কৃষকদের সংসার। তাই বন্যার পানিতে এই সম্বল হারিয়ে দিশেহারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা।

অন্যদিকে কয়েকদিন আগে এই দুই নদীর পানি উল্লেখ্যযোগ্য হারে কমলেও গত দুইদিনের ভারী বর্ষণের কারণে আবারও নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে এই দুই নদীর পানি। নতুন করে বন্যাকবলিত এলাকার মাঠ-ঘাটে বন্যার পানি প্রবেশ করায় নতুন আতঙ্কে পড়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।

রাণীনগরের মালঞ্চি গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, কাঁচা মরিচ, পটল, ধানের বীজতলাসহ কয়েকটি ক্ষেত বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। মাঠের পানি না কমায় নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে পারছি না। আর মরিচের ক্ষেত থেকে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে গাছগুলো মরে যাচ্ছে। এই ক্ষেতগুলোই ছিলো আমার শেষ সম্বল। এই ফসল নষ্ট হওয়ায় আমি এখন দিশেহারা।

মান্দার বিষ্ণুপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, চার বিঘা সবজি ক্ষেত এখন বন্যার পানির নিচে। বন্যার পানিতে সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কি করে চলবে সংসার, এই ভাবনা যেন পেয়ে বসেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মাহাবুবার রহমান বলেন, বন্যার পানিতে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে। তবে কিছু কিছু এলাকার ফসল সম্পন্ন নিমজ্জিত হওয়ায় সেই সব এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ একটু বেশি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সরকারের সহায়তা করার কোন সংবাদ এখন পর্যন্ত তার কাছে নেই বলে জানান তিনি।

(বিএম/এসপি/জুলাই ২৬, ২০১৯)