মানিক বৈরাগী


বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট, সাহিত্য-সংস্কৃতি, আন্দোলন-সংগ্রামরে এক অপরিহার্য অংশের নাম আহমদ ছফা। বাঙালির সময়ে জন্ম নেওয়া আহমদ ছফার বাড়ি পটিয়ার চন্দনাইশে। বড় হওয়ার সাথে সাথে পরিচিত হন সমগ্র ভারতবর্ষ এবং ব্রিটিশকে কাঁপিয়ে দেওয়া মাস্টারদা সূর্য সেন, অনন্ত সিংহ, মনিরুজ্জামান এছলামাবদী, কল্পনা দত্ত, আবুল কাসেম সহ প্রমুখ বিপ্লবীর জীবনী, আদর্শ এবং মহাপুরুষের সংগ্রামের কাহিনীর সাথে।

পরিচিত হন আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের; যিনি না হলে মধ্যযুদের সাহিত্য উপাখ্যান এত বড় করে বাঙালি জাতি জানতে পারতো কি না সন্দেহ। নবীন সেনের ভাষায়-আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের ঘুষ প্রাচীন পুঁথি সংগ্রহ। ইতিহাস অনুসন্ধানী আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের জন্ম এলাকাও পটিয়ায়।

আহমদ ছফার ছাত্রজীবনে শিক্ষক হিসেবে পান আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের গভীর অনুধ্যানের সাথে পরিচিত হয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিতেন আহমদ শরীফ। আহমদ শরীফের পরামর্শও তার স্নেহধন্য আহমদ ছফার গতিকে বেগমান করে। আহমদ ছফার রক্তের স্রোত প্রবাহে এক আদর্শিক বিপ্লবী জীবন প্রবাহিত। তার রক্ষের স্রোতধারা-ই তাকে বিচলিত করতো বিপ্লবী মানুষ ও সংগ্রামী মানুষের সান্নিধ্য, পরামর্শ এবং সাহচার্য। জ্ঞানক্ষুধা ও বাঙালি জাতির মুক্তির যাতনা তাকে প্রকৃতির নিয়মেই প্রফেসর আবদুর রাজ্জাককে খুঁজে নেন আহমদ ছফা। এই আবদুর রাজ্জাকই আহমদ ছফাকে পরম শিষ্যত্বের আসনে আসীন করেন।

আবদুর রাজ্জাক এই ঠোঁঠকাটা মানুষটিকে নির্লোভ সত্যনিষ্ট প্রতিবাদী নির্মোহ আমৃত্যু অটল থাকার প্রেরণা যোগান। তাই ছফা লিখে ফেললেন ‘যদ্যপি আমার গুরু’। আহমদ ছফা যেমন আবদুর রাজ্জাকের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন এই মফস্বল এলাকায় অবস্থানে থেকেও এই দেবতুল্য ছফার সান্নিধ্য পেয়েছি বেশ ক’বার। এ সান্নিধ্য আমার জীবনের পরম পাওয়া। সান্নিধ্যের দিন সনের কথা ঠিক মনে নেই-তবে তখন আমি চকরিয়া কলেজের ছাত্র। আশির শেষ ভাগ এবং নবইয়ের উত্তাল সময়। এশাদ বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী এবং খেলাঘরিয়ান হিসেবে কলেজে সাহিত্য-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড জোরদার ছিলো। ওই সময়ে আমার বড় ভাই কমরেড জাফর আলমের মাধ্যমে আহমদ ছফার সান্নিধ্য পাই।

সান্নিধ্য পাওয়ার আগের ইতিকথন তো একটু জানা দরকার। আমি কলেজ থেকে বাড়ি আসার পর একদিন আমার বড় ভাই একটি কবিতার বই হাতে দিলেন। বলেলেন-‘তুই তো কলেজে কবিতা আবৃত্তি করিস। জাতীয় কবিতা পরিষদ করিস। তো এই বই থেকে একটি বকবিতা মুখস্ত করবি। কবিতা মুখস্ত করতে পারলেই তোকে ছফা ভাইয়ের কাছে নিয়ে যাবো। এই বই থেকেই তোকে কবিতা মুখস্ত করে আবৃত্তি করে শোনাতে হবে ছফা ভাইকে। বড় ভাইয়ের কথা শোনার পর আমি বললাম-আমি একা নাকি কলেজের সবাই। তখন তিনি বললেন-ছফা ভাইয়ের সময়ের উপর নির্ভর করে কলেজের সবাইকে ছফা ভাইয়ের ওখানে নিয়ে যাবো। এরপরে দেখা যাবে। এও বললেন-ছফা ভাই আসবেন-তোকে ছফা ভাইয়ের কাছে দোয়া নিতে নিয়ে যাবো। উনি অনেক বড় কবি-বুদ্ধিজীবী। ছফা ভাইকে একটি কবিতা আবৃত্তি করে শোনাবি এবং তোকে দেয়া করে দিবো-ছফা ভাইও অনেক খুশি হবে। তো বড় ভাই কাছারি ঘর থেকে চলে গেলেন আর একটি উল্টে দেখি ‘প্রবীণ বটের কাছে প্রার্থনা’। এই নামটি দেখেই আরো আগ্রহ জাগলো। আগ্রহ জাগার বেশ কারণও আছে। আগে থেকেই অর্থাৎ স্কুল জীবনেই আমি আহমদ ছফার লেখার সাথে পরিচিত ছিলাম।

আমার পরিবারে বইপড়ার অভ্যাস ছিলো বেশ। আমি যখন বড় হচ্ছি তখনি আমার বাবা ছালেহ আহমদ সাহেব ও বড় ভাই জাফর আলমের বইপড়ার দুইটি গ্রুপ। বাবা রোমেনা আফাজের দস্যু বনহু, কাজী আনোয়ার হোসেনের মাসুদ রানা সিরিজসহ অন্যান্য সুফীবাদী বইগুলো পড়তেন এবং একে অপরকে পড়তে উৎসাহী করতেন এবং গ্রুপে বই বিনিময় করতেন। আর বড় ভাইয়ের গ্রুপের সদস্যরা বেশিরভাগই প্রগতিধারার বই এবং রুশ সাহিত্য পড়তেন। বাবা ও বড় ভাইয়ের পড়া দেখে পারিবারিক ভাবে বইপড়ায় উৎসাহিত হই। লাইব্রেরিতে খুঁজে বইপড়তাম এবং সাধ্যমতো পছন্দমতো বই সংগ্রাম করতাম। এভাবে পড়তে পড়তে একদিন আর মুজিব (যিনি কমরেড হাজী বশিরের শালা)। চকরিয়া হাই স্কুলে যাওয়ার পথে সাহিত্য নিকেতন লাইব্রেরিতে যাই-সেখানে দেখি আমাদের আত্মীয় ও চকরিয়া হাই স্কুলের বিজ্ঞানস্যার জয়নুল আবেদিন বসে আছেন। এই লাইব্রেরি জয়নাল স্যারের। স্যারকে দেখেই আমরা ভয়ে পিছিয়ে আসি। তখন স্যার দেখেই আমাদের ডাক দিলেন। বললেন, ‘আস কী হয়েছে, ভয় পেয়েছো? কী নেবে। তার জবাবে আমি বললাম-স্যার আউট বই (এ সময় আমরা স্কুল পাঠ্যের বাইরের বইকেই আউট বই বলতাম) কিনতে এসেছি।’ তুমি আউট বই পড়ো-, হু স্যার। স্যার তখনি আমাকে নিউজপ্রিন্টের একটি বই হাতে ধরিয়ে দিলেন এবং বললেন এটি পড়ো। তখন মুক্তধারা সবাই পড়ার স্বার্থে কোনো বই প্রকাশ করতো নিউজপ্রিন্টের। খুলে দেখি মুক্তধারা প্রকাশনীর ‘জাগ্রত বাংলাদেশ’। লেখক আহমদ ছফা। নিউজপ্রিন্টের বইটির অর্ধেক মূল্যে আমাকে দিলেন স্যার। বাড়ি ফিরে বইটি পড়া শুরু করলাম-এত সরল বর্ণনার মধ্য দিয়ে বইটি লিখেছেন আহমদ ছফা। আমি অশ্রুজল চোখে পড়েছি। এই বইটি একজন কিশোরের জন্য মুক্তিযুদ্ধকে জানা ও বুঝার জন্য খুব সহজ পাঠ, সেই থেকে একটি জীবন মুক্তিযুদ্ধকে জেনেছি। যাক, মূল্য আলোচনায় ফিরে আসা যাক-আমরা ছিলাম বড় ভাইয়ের দেওয়া ‘প্রবীণ বটের কাছে প্রার্থনা’।

কাছারি ঘরেই শুয়ে শুয়ে কবিতার বইটি পড়তে লাগলাম। একদিন কলেজে গিয়ে ‘প্রবীণ বটের কাছে প্রার্থনা’ থেকে কয়েক স্ববক আবৃত্তি করে শোনালাম। তখন আমাদের পদ্মলোচন স্যার বলেলেন, স্ক্রিপ্ট দেখে কবিতা আবৃত্তি করে সুন্দর দেখায় না। কবিতা মুখস্ত করে আবৃত্তি করলে কবিতার গাম্ভীর্য থাকে। স্যারের এ কথার শুনার পর কবিতা মুখস্ত করতে থাকি দিনরাত। অবশেষে রিহার্সেল হিসেবে কলেজে একদিন কবিতা পরিষদের ব্যানারে আবৃত্তি অনুষ্ঠানে এই কবিতাটি আবৃত্তি করি। আমরা তখন চকরিয়া কলেজে অধ্যাপক দ্মলোচন বড়–য়ার তত্ত্বাবধানে জাতীয় কবিতা পরিষদ করতাম।

কবিতা পরিষদের মাধ্যমে আমরা অনেক কবিতার অনুষ্ঠান করেছিলাম। আমাদের জালাল ভাই ছিলো নজরুল বিদ্রোহী কবিতার নির্ধারিত আবৃত্তিকার। আর আমি যেটি দেয় সেটি করতাম। সাথে ছিল জন্নাতুল বাকিয়া দিনা, শাহিন আক্তার, সত্যজ্যোতি রুদ্র, অনিতা-সুনিতা দুই সহোদরা, বিপ্লব, সাবিনাসহ আরো অনেকে। একদিন কলেজ থেকে বাড়িতে আসার পরই বড় ভাই বললেন ‘তোর কবিতা কি মুখস্ত হয়েছে’ ছফা ভাই এখন কক্সবাজার শহরে। কাল যেতে হবে। তাই রেডি থাকিস। পরদিন সকালে বড় ভাইয়ের সাথে কক্সবাজারের বাহারছড়ার বিজিএস (বাংলা-জার্মান সম্প্রীতি) এর অফিসে। অফিসে ঢুকে দেখলাম ছফাস্যারকে ঘিরে অনেকে জড়ো। ছফাস্যারের সাথে বড় ভাই কুশল বিনিময়ের পর তাদের ব্যক্তিগত কথাবার্তা বললেন। আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন এবং আমাকে দেখিয়ে বললেন, চফা ভাই এ আমার ছোটো ভাই সাইফ উদ্দিন আহমেদ মানিক। নামটি শুনার পর ছফাস্যার একটি অট্টহাসি দিয়ে আমাকে কাছেই টেনে নিলেন এবং বললেন-তুমি তো অনেক বড় নেতা! অনেক বড় নেতার নাম বহন করছো তুমি। তখনি বড় ভাই জাফর আলম ছফাস্যারকে বললেন ‘চফা ভাই মানিক আপনাকে দেখতে ও আপনার কবিতা আবৃত্তি করে শোনাতে এসেছেন।’ তখনি ছফাস্যার মিস্টি হাসি দিয়েই বললেন ‘দেখি শোনাও দেখি।’ তখন আমি প্রবীণ বটের কাছে প্রার্থনা’ থেকে কয়েকগিহট স্তুবক শোনাতেই ছফাস্যার আমাকে থামিয়ে দিলেন এবং বললেন-তুমি কবিতাটি কিভাবে মুখস্ত করেছ, অনেক কষ্ট করেছো। আর কি কি কবিতা মুখস্থ আছে তোমার। আপনি কি কি কবিতা শুনতে চান। তখন তিনি আর একটি কবিতা শোনাও অন্য কবির। তখন আমি সদ্য মুখস্ত করা কবি মোহন রায়হানের ‘তোমাকে মনে পড়ে যায়’ এটি আবৃত্তি করে শুনালাম। ছফাস্যার খুশি হয়ে আমাকে বুকে টেনে নিলেন। ততক্ষণে ছফাকে দেখে যে ভয়টি জন্মছিলো তা উবে গেছে। স্যার এর সাথে একি টেবিলে বসে আমরা অনেকেই দুপুরে ভাত খেলাম। খাওয়ার পর আমাকে ফল মূল খেতে দিলেন। আসার পথে তিনি আমাকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে পকেট থাকে সম্ভবত ৫শ টাকা উপহার দিলেন। আর বললেন, স্কুলের বই আগে তারপর অন্য বই। ভালো থাকবে। সেই দিনের মতো বিদায় নিয়ে আহমদ ছফাকে আরো পাঠ করতে শুরু করলাম এবং যা এখনো শেষ হয়নি।

ইতোমধ্যে বাংলার আকাশে বয়ে যায় এক ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড়। এ ঘুর্ণিঝড়ে সমগ্র কক্সবাজার লন্ডভন্ড। চারদিকে লাশের গন্ধ। এই নিরন্ন মানুষের বিপদে সাড়া দিলেন আহমদ ছফা। বেগম খালেদা জিয়ার সরকার না আসার আগেই ছফা ও তার দল ছুটে এলেন কক্সবাজারে। ছফা কক্সবাজারের প্রতিটি উপজেলায় গেছেন। কক্সবাজারের পাবলিক লাইব্রেরি হলে চালু করলেন চিকিৎসা সেবা লঙ্গরখানা। ছফাকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ছফাকে ঘিরেই কক্সবাজারে গড়ে উঠে বিশ্বজিত সেন বাঞ্চুর নেতৃত্বে অভিজ্ঞান মুক্ত কেন্দ্র। বইপড়া আন্দোলন। আমি প্রতি সপ্তাহে কক্সবাজার আসতাম বই পড়া আন্দোলনে। এখানে এটির পাশাপাশি অধ্যাপক আবু সাইয়িদস্যার তত্ত্বাবধানে পাবলিক লাইব্রেরি কেন্দ্রিক বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র। তবে আমাকে টানত বাঞ্চু দার নেতৃত্বে অভিজ্ঞান মুক্ত কেন্দ্রের পাঠচক্র। আমি মফস্বলের তরুণ, কক্সবাজার শহরের তরুণেরা আমার থেকে অনেক বেশি অগ্রগামি। তখন সোমনাথা চক্রবর্তি সম্বু, শাহিন ভাই, বদরুল হুদা সিদ্দিকী, আল হারুন সিদ্দিক ভাই, কোয়েলসহ আর অনেকেই থাকত। বাহারছড়ায় বাংলা-জার্মান সম্প্রীতিতে মাঝে মাঝে আসতেন আহমদ ছফা। ছফাস্যার কক্সবাজার এলেই অনেক বড় বড় লোকের সমাগম হতো।

আহমদ ছফা কক্সবাজারের সখের বসে শুধু রিলিপ ওয়ার্ক করতে আসেননি। ছফা কক্সবাজারে মানবিক মানুষ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন। ছফা কক্সবাজারের মহেশখালি উপজেলার এমন গ্রাম নেই-যেখানে পা পড়েনি। নিজে হেটে হেটে প্রতিটি গ্রাম ঘুরে ঘুরে কোথায় কি কি অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে তা দেখে যেখানে সাইক্লোন শেল্টার এবং এই শেল্টারগুলোকে বহুমুখী ব্যবহার, স্থায়িত্ব ও রক্ষণাবেক্ষণের ও পদ্ধতি গড়ে দিয়েছিলেন। যাকে ঘর বেধে দেয়া দরকার সেখানে ঘর করে দিয়েছেন, যেখানে বেড়িবাধ দরকার সেখানে বেড়িবাধের ব্যবস্থা করেছেন। সাথে প্রতিটি বেড়িবাধে গাছ লাগিয়েছেন। গাছ আবার বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ মতে নয়, তিনি লাগিয়েছেন পরিবেশ সম্মত দেশজ ফলজ ও বনজ গাছ। আর অন্যান্য এনজিও ইউক্লিপ্টাস ও মেহগণি, আকাশ মণি। এই গাছগুলি পরিবেশের ক্ষতিকর। সাইক্লোনে ধ্বংস হয়ে যাওয়া প্যারাবন সৃজন করেছেন। তিনি এসবের জন্য কক্সবাজারের কলাতলীতে একটি নার্সারিও গড়ে তুলেন। সাইক্লোন শেল্টার এখনো প্রায় সুরক্ষিত আছে মাতারবাড়ি, কালারমার ছড়া, ধলঘাটা, কুতুবজোমসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে। তিনি আদিনাথ মন্দিরের সংস্কার কাজের জন্য অর্থ সহায়তা করেছিলেন। কক্সবাজারের রামুর মন্ডলপকাড়ায় আনন্দ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তুলে নাটক, আবৃত্তি, সংগীত শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তুলেন, সাথে ঝরেপড়া কিশোরদের জন্য ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেরও ব্যবস্থা করেন। কক্সবাজারের অভিজ্ঞানচ মুক্তকেন্দ্রকেও যথেষ্ট সহযোগিতা করেন। অভিজ্ঞান মুক্ত কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে বির্তক প্রতিযোগিতা, পাঠ চক্র, বিজ্ঞান চর্চা ও বিভিন্ন প্রকাশনী প্রকাশের ব্যবস্থা করেছিলেন।

চকরিয়া উপজেলার বদরখালিতে ফরহাদ মজহারের তত্ত্বাবধানে উবিনিগ এর মধ্য দিয়ে কৃষি আন্দোলন, খাসজমি বন্দোবস্তু আন্দোলন গড়েন। ছফা বদরখালিতেও গিয়েছিলেন। সেখানে সাইক্লোন আক্রান্ত মানুষের পাশে এসে দাড়িয়েছিলেন। উখিয়া উপজেলার উপকূলীয় এলাকায়ও তিনি রিলিফ ওয়ার্ক ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে দিয়েছেন। টেকনাফের ‎‎হীলার রঙ্গিখালী মাদ্রাসাও পরিদর্শন করেছেন, এতিম বাচ্ছাদের সাথে কথা বলেছেন। এ নিয়েও ছফার একটি গদ্যও আছে। ছফা কক্সবাজার বালিক লাইব্রেরিকে অনুদান দিয়েছিলেন বলে শুনেছি।

কক্সবাজারবাসির অনেকেই আহমদ ছফার সান্নিধ্য সাহচার্য পেয়েছেন-এর মধ্যে মুহম্মদ নূরুল হুদা, ড. সলিমুল্লাহ খান, কমরেড জাফর আলম, কবি রুহুল কাদের বাবুল, অধ্যাপক মকবুল আহমদ, ডা. বাসুদেব চক্রবর্তী, আদিল চৌধুরী, সাদাত উল্লাহ খান, শাওয়াল খান, বিশ্বজিত সেন বাঞ্চু, মাস্টার শাহ আলম, সাংবাদিক মুহাম্মদ আলী জিন্নাত, অভিজিৎ কাজল, কামরুল হাসান, আসিফ নুর, সিরাজুল হক সিরাজ, আফ্রিকা প্রবাসী কবি গীতিকার রিয়াজ শহীদ, শাকিল মামুদ, ড.রাহমান নাসির উদ্দীন, জাহেদ সরওয়ার, সাইফুল ইসলাম কলিম প্রমুখ।

আর রাজনৈতিক ও সুধী সমাজের মধ্যে প্রফেসর মোশতাক আহমদ, অধ্যক্ষ ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী, অধ্যাপক সোমেস্বর চক্রবর্তী, এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, নুরুল আবছার চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহাজাহান, একেএ ফরিদ আহমদ প্রমুখ।