আজিজ রহমান : শহরের গন্ডিবদ্ধ জীবন যখন যান্ত্রিকতার ভেতর আবদ্ধ তখন আনমনেই হৃদয় সু-শান্তি চায় , আর তখন মনের প্রশান্তির জন্যই মানুষ ভ্রমনপিপাসু হয় । ভ্রমনের ভিতরেই শূন্যতাগুলো মনোরম হয়ে উঠে। একটি সুষ্ঠ, শৃঙ্খল, সুন্দর ভ্রমন মানুষের সারাজীবনের স্মৃতি হয়ে যায়, তাই যেখানেই ভ্রমন করুন না কেন ভ্রমনের পুর্নাঙ্গ আনন্দের রূপটাই আসল বিষয় ।


সেই জন্য ভ্রমনটাকে জীবন্ত করতে প্রয়োজন ভ্রমনের জায়গা সর্ম্পকে পুঙ্খানো পুঙ্খ ভাবে ভালো করে জানা । ভ্রমনের জায়গা নির্ধারণ নিয়ে অনেক সময় সমস্যার কারণ হয়ে যায় , এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন সমষ্টিগত সিদ্ধান্ত। ভ্রমনের জায়গা নির্ধারণের পর বন্ধু, বাংলাদেশ পর্যটন অফিস কিংবা পরিচিত লোকজনের কাছ থেকে খোঁজ-খবর নেয়া প্রয়োজন যারা ঐ জায়গায় পূর্বে গিয়েছিল এমনতো আজকাল অনেক হয় যে- একটি ভালো জায়গায় ভ্রমন হয়েছে কিন্তু ঐ জায়গায় আরো ভালো স্পট ছিল যা মিস হয়ে গেছে , এই মিস থেকেই অতৃপ্তির সৃষ্টি হয় যেহেতু মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সংখ্যাই বেশি আর তাতে এক জায়গায় বার বার যাওয়াও সবার সাধ্য সীমার বাইরে ।

ভ্রমন স্পটের মত জানা প্রয়োজন সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্ম্পকে, তারুণ্য সময়ে চঞ্চল রোমাঞ্চপ্রিয়তা বেশি তাই তারা খোলা মাঠ,বিস্তৃত দিগন্ত পেলে - রং , ছন্দ, সুর ছড়িয়ে হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে চায় কিন্তু অপরিচিত জায়গাতে খুশির আনন্দটুকু না-বুঝা/ভুলের কারণে যেকোন সময় ফিকে যেতে পারে যেমন যে সাঁতার পারে না তার জন্য নৌকো ভ্রমন যেমন সমস্যার তেমন হাওয়ায় মিলিয়ে যেয়ে খালি হাতে ফিরে এসেছে অর্থ্যাৎ বদ-লোকের উপস্থিতি সবখানেই –চোর, ডাকাত পর্যটন এলাকাতে এমনিতেই বেশি থাকে, অনেক রিকশা ওয়ালা থেকে শুরু করে হোটেল/রেষ্টুরেন্টের-ওয়েটাররা অপরাধ জগৎ এর সাথে জড়িত থাকে ।

পর্যটন এলাকার মানুষের আচার আচরণ কেমন সেটা সর্ম্পকে জানা জরুরী কারণ এক-এক এলাকার লোকজন এক-এক পরিবেশে মানুষ আর মানুষ থেকে মানুষের ভিন্নতা বহুকালের সেখানকার মানুষের ব্যবহার রুক্ষ কি সাধারণ তা-জানা প্রয়োজন বা রাজনৈতিক উত্তেজনা কতটুকু দেশের পরিস্থিতিত যে-কোন সময় নরম, গরম হয় কিছু বিশেষ এলাকাতে রাজনৈতিক সহিংসতা বেশি সেগুলো এড়িয়ে যাওয়া প্রয়োজন আর আপরাধ সংগঠিত এলাকাতে নিরপাদের বিষয়টি জানা দরকার এই বিষয়ে সকলকে সর্তক অবস্থায় থাকতে হবে । যে হোটেলেই উঠুন না কেন তা অবশ্যই নিরাপদ থাকতে হবে সে বিষয়ে আগে থেকেই জেনে রাখা ভাল ,পর্যটন এলাকার মার্কেট থেকে কোন পন্য কিনলে যাচাই করে কিনা ভালো..অনেক সময় তারা পর্যটক ভেবে দাম বেশি রাখে ।

যাহবাহন যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো এমনটি স্থান নির্নয় করা উচিত কারণ আমাদের আঁকা-বাঁকা রাস্তায় সড়ক র্দুঘটনার পরিমান বেশি বা কোন নির্জন জায়গায় রাতের বেলা গাড়ির চাকা পামচার হয়ে গেলে ভোগান্তিই বেশি হবে । রেল ,সড়ক ও নদী পথের মধ্যে ঋতুর সাথে মিলিয়ে পরিবহন পছন্দ করা ভালো –যেমন বর্ষা/ঝড়ের দিনে নদীপথে ভ্রমন করা ঝুকিঁ । গাড়ি কোথায় কোথায় থামবে তা গুরুত্ব সহকারে জেনে রাখা ভালো, প্রয়োজনীয় কাজ তখনই সেরে ফেলা ভালো , কারো হঠাৎ করে টয়লেট চাপলে একজনের জন্য তো গাড়ি থামাবে না তাই এইসব বিষয়গুলো আমলে নিতে হবে ।

ঋতুর সাথে ভ্রমন বিষয়টাও জরিত ভ্রমনের আগে জেনে রাখা ভাল সেখানকার তাপমাত্রা আবহাওয়া কারণ শহরে শীতের আগে শহরের বাইরের এলাকাগুলোতে আগেই শীত পড়ে এবং শীত চলে যায় দেরিতে , সেই অনুযায়ী কাপড় নেয়া প্রয়োজন বা কোন এলাকায় বৃষ্টির পরিমান বেশি - ভ্রমন করার পর দেখলেন বৃষ্টির কারণে ভ্রমনটাই মাটি হয়ে গেছে । দলগত ভাবে ভ্রমনে গিয়ে কোন ভাবেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা বুদ্ধিমানের কাজ নয় , তাই সেখানকার মোবাইল নেটওর্য়াক সর্ম্পকেও পূর্বে খোজ নেয়া প্রয়োজন কারণ বহু পর্যটন এলাকায় মোবাইল নেটওর্য়াক পাওয়া যায়না যা পরিবার, পরিচিত জনদের জন্য দুশ্চিন্তার কারন। ভ্রমন সর্ম্পকে পূর্ব ধারনা নেয়ার জন্য নিচের ওয়েবসাইট গুলোর সাহায্য নিতে পারেন:www.parjatan.gov.bd ,www.visitbangladesh.gov.bd,www.bandarbantours.com প্রযুক্তির এই যুগে স্থান সর্ম্পকে পূর্ব প্রস্তুতি নিতে পারেন আরো নানা উপায়ে - ইন্টারনেটে সার্চ দিলে এখন উইকিপিডিয়াতে প্রতিটি জেলার তথ্য বের হয়ে আসে এবং সেখানে পর্যটন এলাকার বিষয় খুব সুন্দর ভাবেই দেয়া আছে । একটি সুন্দর ভ্রমন –সুন্দর স্বপ্নধারার জাল হয়ে অন্তহীন বেচেঁ থাকে তাই যে-কোন ভ্রমনের পূর্ব ধারণা সৌন্দর্যবোধের জন্মদেয় সুন্দর ভ্রমন হয়ে ।


(এআর/এএস/মার্চ ০৩, ২০১৪)