মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারে এ-পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন সর্বমোট ১১ জন রোগী। এদের মধ্যে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধিন আছেন মোট দুইজন । অন্য দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় এরা বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে সিভিল সার্জন কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে।  

জানা যায়, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়া চারজনের মধ্যে দুইজন রোগী ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকৎিসার জন্য সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের চতুর্থতলায় আলাদা ডেঙ্গু কর্ণার চালু করা হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে ফিরেই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধিন আছেন মৌলভীবাজার পলিট্যাকনিক ইন্সটিটিউটের কম্পিউটার বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রহমান আলী খান ও সদর উপজেলার বর্ষিজোড়া এলাকার হেলু মিয়ার পুত্র মারাজ মিয়া (৩৫)। মৌলভীবাজার পলিট্যাকনিক ইন্সটিটিউটের কম্পিউটার বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রহমান আলী খান জানান তার পাশের একজন শিক্ষার্থী ঢাকা থেকে হোস্টেলে ফেরার পরপরই তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন । চারদিন যাবত হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রহমান খান জানান বর্তমানে তিনি অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠছেন।

এদিকে ডেঙ্গু রোগ শনাক্তে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ২৫টি রেপিড টেস্ট হস্তান্তর করা হয়েছে। রবিবার (২৮ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: পার্থ সারতী পাল কাননগো’র কক্ষে সিভিল সার্জন ডা: শাহজাহান কবির চৌধুরীর হাতে এসব ডিভাইস হস্তান্ত করেন মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ফজলুর রহমান।

বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) এর মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি ডা: সাব্বির হোসেন ঢাকা থেকে ডেঙ্গু রোগ শনাক্তকরণ ডিভাইস রেপিড টেস্ট গুলো সংগ্রহ করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডা: আব্দুল্লাহ আল বাকী, মৌলভীবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফয়সল আহমদ, ১১নং মোস্তফাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ রুমেল আহমদসহ হাসপাতালের কর্মকর্তারা।

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: আহমেদ ফয়সল জামান বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসাসহ সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত। তিনি বলেন ইতি মধ্যে এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দিয়েছেন। মৌলভীবাজারে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার সম্ভাবনা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ডা: আহমেদ ফয়সল জামান বলেন এটা নিয়ে আগাম কোন মন্তব্যের সুযোগ নেই।

সিভিল সার্জন ডা: শাহজাহান কবির চৌধুরী জানান, এপর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন পুরো জেলায় সর্বমোট ১১জন । তিনি বলেন ডেঙ্গু আক্রান্তদের সু-চিকিৎসা দিতে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ প্রস্তুত রয়েছে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ।

মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ফজলুর রহমান বলেন ডেঙ্গু প্রতিরোধে পৌরসভার পক্ষ থেকে ২৫ জুলাই হতে বিভিন্ন এলাকায় পরিচ্ছন্ন অভিযান, র‌্যালী, প্রচারণাসহ নানা কর্মসূচী চালিয়ে আসছি। তিনি বলেন প্রতিদিন পৌরসভার ৬০ জন পরিচ্ছন্নকর্মী একাজে যুক্ত আছেন।

উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্থে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু। ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রতিদিনই বাড়ছে। এডিস মশার বিস্তার ঘটার কারণে এমনটি হচ্ছে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে বলে বিভিন্নস্থানে পানি জমছে। সেখানে এডিস মশা ডিম দিচ্ছে। মশার বংশবৃদ্ধি বেশি বেশি হচ্ছে। মশার সংখ্যা বাড়ার কারণে সেসব মশা কামড়াচ্ছে। ফলে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।

(একে/এসপি/জুলাই ২৮, ২০১৯)