সুকুমল কুমার প্রামানিক, রাণীনগর (নওগাঁ) : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর পোস্ট অফিসের মাটির ঘরের উপর প্রাচীনতম বটগাছ পরে ঘর বিধস্ত হয়ে গেছে। ফলে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে চরম বিপাকে পরেছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, পাকিস্তান সরকারের আমলে রাণীনগর উপজেলার পূর্বাঞ্চলে সুবিধা বঞ্চিত বিশাল জনগোষ্ঠীকে ডাক বিভাগের সেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে তৎকালীন সময়ে আবাদপুকুর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় কালীগ্রাম মৌজার এক নাম্বার খাস খতিয়ান ভূক্ত দুই শতাংশ জমির উপর বাঁশের বেঁরা দিয়ে ছোট্ট একটি ঘর তৈরি করে আবাদপুকুর পোস্ট অফিসের গ্রাহক সেবার কাজ শুরু করা হয়।

পরবর্তিতে রেকডের সময় ওই দুই শতাংশ জায়গা ক্ষতিয়ানে শুধুমাত্র “শ্রেনীতে” ডাকঘর উল্লেখ করা হয়। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে এই ঘরটি কয়েক দফা ভেঙ্গে চূড়মার হয়ে গেলে স্থাণীয় কিছু ব্যক্তির একান্ত প্রচেষ্টায় এবং প্রতিষ্ঠানটি রক্ষা ও এলাকাবাসীর ডাক বিভাগের সেবার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবে আর্থিক সহযোগীতায় বাঁশের ঘর থেকে মাটির দেয়াল দিয়ে ঘরটি নির্মান করা হয়।

পোস্ট মাস্টার, পোস্ট ম্যান ও এক জন রানার নিরলস ভাবে গ্রাহক সেবা দিয়ে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা রাজস্ব আয় করলেও উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে ইট দিয়ে নিজস্ব ভবন তৈরি হয়নি। রাণীনগর উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়ন, একডালা ইউনিয়ন, বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার চাপাপুর ইউনিয়নের আংশিক সহ প্রায় ৬০টি গ্রামের বাসিন্দাদের জরুরি ডাক সেবা প্রদান করে থাকে এই পোস্ট অফিস থেকে। এরই মধ্যে গত বুধবার হঠাৎ করেই পোস্ট অফিসের পিছনের একটি প্রাচীনতম বটগাছ মাটির ঘরের উপর পরে গেলে টিনের চালা এবং দেয়াল ভেঙ্গে বিধস্ত হয়ে যায় । এর পর থেকে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

আবাদপুকুর পোস্ট অফিস মাস্টার এমদাদুল আলম জানান, এই প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পাকা ভবনের জন্য দীর্ঘ দিন চেষ্টা করেও কোন ফল পাওযা যায়নি। ঘরের উপর গাছ ভেঙ্গে পরে বিধস্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে একটি দোকানে অস্থায়ীভাবে কোন মতে অফিসিয়াল কাজ করতে হচ্ছে। নতুন ঘর নির্মান ছাড়া ওই ঘরে অফিসিয়াল কাজ করার কিঞ্চিত পরিমান সুযোগ নেই। তাই এ অবস্থায় ডাক সেবা দেয়া নিয়ে সংশ্বয় প্রকাশ করেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে বগুড়া ডিভিশনের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল আনোয়ার হোসেন এর সঙ্গে টেলিফোন এবং তার ব্যক্তিগত নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

(এসকেপি/এসপি/আগস্ট ০৩, ২০১৯)