মানিক বৈরাগী


আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আছে তিন মেয়াদে।বর্তামান মেয়াদের কতিপয় মন্ত্রী এমপি ও দলিয় নেতাদের রাজনৈতিক আচার আচরণ বক্তব্য বিবৃতি ও লোক দেখানো কর্মকাণ্ড দেখে অতিত ভণ্ডামি তুলে না ধরে পারলাম না মেজর জিয়া একবার মেজর মঞ্জুর কে সকালে দেখা করতে বললেন যখন মঞ্জুর জিয়ার সাথে দেখা করতে গেলেন তখন জিয়া বাইরে পাউরুটি চিনি ও কিছু জেলি নিয়ে নাস্তার টেবিলে সকালের নাস্তা করার প্রস্তাব দিলেন। 

তারা এক সাথে পাউরুটি দিয়েই নাস্তা করলেন। কিন্তু সামরিক বাহিনীর নাস্তার তালিকা আরো দীর্ঘ। এবং মেজর জিয়া ওই ম্যানু দিয়ে এমনিতেই নাস্তা করেনা।এসব মঞ্জুর নিজেও জানে। মঞ্জু জিজ্ঞেস করলেন তুমি এই ম্যানু দিয়েই সকালের নাস্তা সারো?

উত্তরে জিয়া বললেন দেশ কে সমৃদ্ধ করতে হলে আমি সামরিক প্রধান ও রাষ্টপতি হয়ে অপচয় করতে পারিনা। মঞ্জুর সাথে প্রাথমিক আলাপ সেরে ভেতরে চলে গেলেন এবং মঞ্জুর কে বিদায় জানালেন।
এরি ফাকে কাজের লোক বের হলে মঞ্জু তার কাছ থেকে জানতে চাইলেন জিয়া কি করছেন কাজের লোক উত্তর দিলেন ম্যাডামের সাথে সকালের নাস্তা করছেন। মঞ্জুর সাথে স্রেফ ভণ্ডামি।

জিয়া ক্ষমতা নেয়ার পরপর সোয়ার হলেন পুরুষের লম্বা চুলের উপর। সামরিক বাহিনী পথে ঘাটে লম্বা চুল ওয়ালা যাকে পায় তাকেই চুল চড় থাপ্পড় দিয়ে চুল কাটা শুরু করে দিলেন। কারণ যুদ্ধ ফেরত মুক্তিযোদ্ধাদের মাথার চুল ছিলো লম্বা।জাসদ নেতাদের চুল ছিলো লম্বা।কবি লেখক অধিকাংশের চুল দাড়ি ছিলো লম্বা। সুফি পীর মশায়েখ মাইজভান্ডারি তরিকার লোক জনের চুল ছিলো লম্বা। এসবের উপর আঘাত করতেই জিয়া ইসলামের দোহাই দিয়ে স্রেফ ভণ্ডামির আশ্রয় নিলেন।

মেজর জিয়ার সময়ে সিরাতুন্নবী(সঃ)মাহফিল চালু করেন,পাশাপাশি তিনি মদ ও জুয়ার লাইসেন্স দেয়া শুরু করলেন। যেটি বঙ্গবন্ধু নিষিদ্ধ করেছিলেন। স্রেফ ভণ্ডামি

জিয়ার গুণধর পুত্র বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে হামলা করার নির্দেশ দিয়ে সেও টুঙ্গিপাড়ায় গিয়েছিলেন।

পাকিস্তান ফেরত মেজর এরশাদ সাত্তার কে হটিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করলেন। তিনিও জনগণের সাথে প্রথম ভণ্ডামি শুরু করলেন সাইকেল চালিয়ে অফিস করার। পত্রিকায় হেডলাইন হলো। পত্রিকায় লিখলো রাষ্ট্রের টাকা বাচাতে রাষ্ট্রপতি সাইকেল চালিয়ে অফিস করেন। স্রেফ ভণ্ডামি।

এরশাদ প্রতি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে স্বপ্ন দেখতেন কোন না কোন মসজিদে জুমার নামাজ পড়ার আদেশ পেয়েছেন। আর ইমামের খোতবার আগেই মুসল্লীদের উদ্যেশ্যে কান্নাকাটি করে বক্তব্য রাখতেন।
আর সেদিন রাতেই কোন কোন সঙ্গীত শিল্পী, টিভির খবর পাঠক, সিনেমা পাড়ার সুন্দরী হাইজেক হতেন।

বর্তমান সরকার অনেক মন্ত্রী এমপি মেয়র কাজের ভান করে ঝাড়ু হাতে নিয়ে কয়েক অভিনেত্রী সাথে নিয়ে মডেলিং মার্কা ছবি তুলে বিভিন্ন মিড়ায় প্রচার করেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়না। যে লাউ সেই কদুই থেকে যান। স্রেফ ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয়।

এই ভণ্ডামির রাজনীতি শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের সামরিক প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান। তিনি নিয়মিত মদ্যপ হলেও ইসলামের হেদায়েত করতেন। এভাবেই কি পুনরাবৃত্তি রাজনৈতিক নেতাদের? কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অন্তরে যা বিশ্বাস করতেন মুখে কর্মে তাই করতেন। আওয়ামীলীগ কে অন্তত বঙ্গবন্ধুর নাম শুধু মুখে নয় কর্মেই প্রমাণ করতে হবে। যদি না পারেন আগামী দিনের মানব জাতি এসব রাজনীতিকদের থেকে কি শিখব? প্রশ্ন সাপেক্ষ।

লেখক : কবি ও নব্বইয়ের নির্যাতিত ছাত্রনেতা।