স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমানে ডেঙ্গুর অবস্থার ব্যখ্যা দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, এ অবস্থাকে আমরা মহামারি বলব না, আবার স্বাভাবিকও বলব না। তবে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে।

বুধবার রাজধানীর মুগদা হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা, নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ কথা বলেন তিনি।

সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। আনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, বিএমএ’র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মহাসচিব মোহাম্মদ ইহতেশামুল হক চৌধুরী, মুগদা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাক্তার গোলাম নবী তুহিন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক।

সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে, যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এই অবস্থাকে আমরা মহামারি বলবো না আবার স্বাভাবিকও বলব না।

তিনি জানান, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, হাসপাতালগুলোতে যদি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিট, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালসহ চারটি সরকারি হাসপাতাল প্রস্তুত করা হচ্ছে।

এদিকে সেমিনারে এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছর এই সময় ১১ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। এ বছর একই সময়ে এর সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ডাক্তার-নার্সদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা সার্বক্ষণিক মনিটারিং করছি।

বর্তমানে ডেঙ্গুর শনাক্তের উপকরণ কিটের কোনো অভাব নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন দুই লাখ কিট আনা হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে সমস্যা হওয়ার কোনো কারণ নেই।

স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, সব বিষয়ের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে। তবে তা সাধারণ মানুষকে সহজ করে বুঝাতে হবে। ডেঙ্গুর বিষয়েও সহজে মানুষকে বুঝাতে হবে। বর্তমানে বাস্তবতা একজন রোগী হাসপাতালে জ্বর নিয়ে আসলে তাকে ভর্তি করবে, এটাই তার প্রত্যাশা।

মুগদা হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে সাবের হোসেন জানান, হাসপাতালে বেডের ধারণক্ষমতা ৫০০, কিন্তু এখানে ১১শ’র বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত। এ সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে হাসপাতালের বাইরে খোলা জায়গা আছে, সেখানে অস্থায়ী ক্যাম্প করা হবে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য জানান, হাসপাতালটি ২০১৩ সালে উদ্বোধন হলেও এখন পর্যন্ত অনেক লোকবলের সংকট রয়েছে। তবে এর মধ্যে আশার কথা সম্প্রতি ৪৫১টি শূন্য পদ পূরণে অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৭ আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হবে। এ হাসপাতালের প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করতে অবশিষ্ট শূন্যপদ পূরণের পাশাপাশি বেশকিছু সিনিয়র নার্স বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত রয়েছেন।

তাদের হাসপাতালে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি। বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন

সেমিনারে ডাক্তারদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগ হয়। বিশ্বের অনেক দেশে এ রোগ হচ্ছে। তবে সচেতনতায় এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এ জন্য ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানান তারা। পাশাপাশি বাড়ির আশপাশ ও এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সাধারণ জনগণ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতি আহ্বান জানান তারা।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০৭, ২০১৯)