জামালপুর প্রতিনিধি : ভিজিএফের চাল উত্তোলন করে বাড়ি ফেরার পথে যমুনা নদীতে ৩০ জন যাত্রী নিয়ে নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে। ৬ জন নিখোঁজ রয়েছে। বুধবার রাতে ১৮ জন এবং বৃহস্পতিবার সকালে ৬ জন নিয়ে মোট ২৪ জন যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করেছে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। প্রবল বাতাস ও নদীতে পানির চাপ বেশি থাকায় আজ দুপুরের পর উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়েছে।

দেওয়ানগঞ্জের চুকাইবাড়ি ইউনিয়নের ফুটানিবাজার ঘাট থেকে বুধবার রাত ৮টার দিকে চর হলকাহাওড়াবাড়ি এলাকায় ফেরার পথে চিনার চর এলাকায় পৌঁছলে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে মাঝ নদীতে নৌকাটি ডুবে যায়।

নিখোঁজ ৬ জন হলেন মৃত দিলদার শিকদারের ছেলে মো. শহীদ শিকদার (৪৫), মো. ফজল হকের স্ত্রী কাঞ্চন মালা (৪৫), মৃত মজিবর রহমানের স্ত্রী রেজিয়া (৪৫), নয়ন (৮), মো. তৈয়ব আলীর ছেলে দুলাল (৩০) ও মো. ছম্মান আলীর স্ত্রী মোছা. আঁকন বিবি (৬৫)।

দেওয়ানগঞ্জের চুকাইবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খাঁন জানিয়েছে, নিখোঁজরা সকলেই চুকাইবাড়ি ইউনিয়নের চর হলকাহাউড়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, উদ্ধারকৃতরা হলেন হাবিবুর রহমানের ছেলে মনোয়ার হোসেন (২৮), ইন্তাজ আলীর কন্যা ৩য় শ্রেণির ছাত্রী রেশমী (১০), মো. সোনা উল্লাহর ছেলে মো. সন্তেষ (৩৫), মো. মহিউদ্দিনের ছেলে মো. সুমন মিয়া (১৫), মক্কর আলীর স্ত্রী মোছা. অনুপা বেগম (৫৫), মঈনউদ্দিনের স্ত্রী ফিরুজা বেগম (৩২) ও ছেলে ৩য় শ্রেণির ছাত্র মমিনুল ইসলাম (৮), মো. আবুল হোসেনের ছেলে মাসুদ মিয়া (১৮), মক্কর আলী আকন্দের ছেলে মো. পাহলোয়ান (৪০), মৃত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী মোা. আনেমা বেগম (৪৫), জব্বার আকন্দের স্ত্রী মুনিয়া বেগম (৬০), ময়েজউদ্দিনের ছেলে মঞ্জু মিয়া (৩০), বারেক আলীর ছেলে কিনু মিয়া (৩৫), মৃত আছু শেখের ছেলে হযরত আলী (৪৫) ও হোসেন আলী (৪০), মো. ছকমানের ছেলে মাহবুবুর রহমান পাষাণ (৩৫), মৃত আয়নাল হকের মেয়ে মনোয়ারা বেগম (৪৫), মৃত ছাবেদ আলীর ছেলে মক্কর আলী (৬৫)সহ ২৪ জন।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, বুধবার বিকেলে চুকাইবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভিজিএফের চাল উত্তোলন করে চর হলকাহাওরাবাড়ির দুস্থ মানুষজন। তারা দেওয়ানগঞ্জ বাজার থেকে কেনাকাটা করে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ফুটানিবাজার ঘাট থেকে নৌকাযোগে চর হালকাহাওড়াবাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। চিনার চর এলাকায় পৌঁছলে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে নৌকাটি। প্রচন্ড বাতাস ও তীব্র ঢেউয়ে ৩০ যাত্রী নিয়ে নৌকাটি মাঝ নদীতে ডুবে যায়। স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল গতকাল রাত, আজ সকাল ও দুপুরে ২৪ জনকে উদ্ধার করেছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে ৬ জন।

জামালপুর ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন অফিসার নুর উদ্দিন জানান, আজ সকালে দেওয়ানগঞ্জের ফুটানিবাজার ঘাট থেকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। নৌকা ডুবির ঘটনাস্থল চিনার চর থেকে থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে প্রজাপতির চরের বিভিন্নস্থান থেকে ৬ জনকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃতরা নৌকাডুবির পর যমুনা নদীতে সাঁতরিয়ে ও ভাসতে ভাসতে পাড়ে ওঠে চরের বিভিন্ন স্থানে রাতে অবস্থান করছিল।

সর্বশেষ ৬ জনকে জীবিত উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন একযোগে কাজ করলেও আজ দুপুরের পর প্রবল বাতাস এবং নদীতে পানির চাপ ও বেগ বেশি থাকায় উদ্ধার তৎপরতা সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে এলে নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।

(আরআর/এসপি/আগস্ট ০৮, ২০১৯)