রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধুসেতু মহাসড়কে বঙ্গবন্ধুসেতুর পূর্ব থেকে মির্জাপুর পর্যন্ত প্রায় ৪৫ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে খুবই ধীরগতিতে থেমে থেমে চলছে যানবাহন। যানজটের কারনে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ। পুলিশ রাস্তায় যানজট নিরসনে কাজ করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায় মহাসড়কের পাকুল্লা, বাঐখোলা, করটিয়া বাইপাস, নগর জালফৈই, রাবনা বাইপাস ও এলেঙ্গা এলাকায় তীব্র যানজট রয়েছে। উত্তরবঙ্গগামী যানবাহনগুলো দাঁড়িয়ে আছে। কিছুটা সামনে আগাচ্ছে, আবার থমকে যাচ্ছে। ঈদের আনন্দ প্রিয়জনের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে ঘরমুখো মানুষের কষ্টের শেষ নেই। অনেকে বাস কিংবা ট্রাকের ছাদে ধুলা ও প্রচন্ড রোদে পুড়ে বাড়ি ফিরছেন। রাস্তায় গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে তাদের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। শিশু ও বয়ষ্করা অসুস্থ্য হয়ে পড়ছেন। অনেকের ভাড়া করা যান বিকল হয়ে ভোগান্তি আরো বেড়ে গেছে। মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসের চেয়ে ট্রাকের পরিমাণ বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

ঢাকা থেকে গোপালপুরগামী রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমি ভোরে স্ত্রী-বাচ্চা নিয়ে বের হয়েছি। দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটে এলেঙ্গা এসেছি। পথে বাঐখোলা নামকস্থানে প্রায় ২ ঘন্টা আটকে ছিলাম। ট্রাকের ছাদে থাকা মায়া বেগম নামের এক গার্মেন্টস শ্রমিক বলেন, রাইতে সাভার থেকে রওনা হইছি। দুপুরে এলেঙ্গায় জ্যামে আছি। জানি না কখন বাড়ি যাইতে পারবো। রাবনা বাইপাসে আটকে পড়া উত্তরবঙ্গগামী রবিউল ইসলাম নামের এক বাসচালক বলেন অন্য বারের থেকে এবার মনে হয় যানজট বেশি হইতাছে।

টাঙ্গাইল ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর এশরাজুল ইসলাম বলেন, উত্তরবঙ্গের দিকে সড়কের ধারন ক্ষমতার চেয়ে বেশি যানবাহন থাকায় সিরাজগঞ্জ প্রান্তে গাড়ি টানতে পারছে না। ফলে ৮ বারে ২ ঘন্টা ২৯ মিনিট সেতু দিয়ে যানচলাচল বন্ধ থাকে। সেইসাথে কিছু গাড়ি রাস্তায় বিকল হয়। এই কারনে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে বঙ্গবন্ধুসেতুতে যানবাহন পারাপার ও টোল আদায়ে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অধীনে বঙ্গবন্ধু সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, শুক্রবার ভোর ৬ টা থেকে শনিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ৩৬ হাজার ৩৩৭টি যানবাহন পারাপার এবং ২ কোটি ৬০ লাখ ৪৩ হাজার টাকা টোল আদায় হয়েছে। যা এ যাবত কালের সর্বোচ্চ পরিমাণ। তিনি আরও বলেন সিরাজগঞ্জ প্রান্তে কড্ডা মোড়, হাটিকমরুল ও নকলা এলাকায় গাড়ি টানতে না পারায় সেতুতে টোল আদায় কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

টাঙ্গাইলে পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, ঢাকার চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলে এলেঙ্গা পর্যন্ত চারলেনের কাজ শেষের দিকে। যানবাহনের চালকরা চারলেনের সুবিধা পাচ্ছেন। এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধুসেতুর পূর্ব পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার এলাকা দুই লেন। তাই চার লেনের গাড়ি দুই লেনের সড়কে ধারন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। এছাড়া এলেঙ্গা বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় খানাখন্দের ফলে যানবাহনের গতি কমে যাচ্ছে। ফলে যানজট ও ধীরগতি হয়। আশা করি বিকেল পর্যন্ত যানবাহনের স্বাভাবিক গতি ফিরে আসবে।

(আরকেপি/এসপি/আগস্ট ১০, ২০১৯)