উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ.এইচ.এম. কামরুজ্জামান মুজিবনগরে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এখন কেবল মুক্তিফৌজ ও দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এই লড়াই এখন জনযুদ্ধে পরিণত হয়েছে। দেশবাসী হানাদারদের বিতাড়িত করে স্বদেশ ভূমিকে মুক্ত করতে বদ্ধপরিকর।

৮নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর পোটখালী বি ও পি ঘাঁটির ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে পাকহানাদার সৈন্যরা পোটখালী বি ও পি অবস্থান ছেড়ে পালিয়ে যায়। মুক্তিবাহিনীর বীর যোদ্ধারা পোটখালী বি ও পি দখল করে সেখানে প্রতিরক্ষা ব্যুহ স্থাপন করে।

পাকনেভী সুন্দরবনের ভিতরে মুক্তিবাহিনী লাওতাড়া ঘাঁটির ওপর দু‘দিক থেকে আক্রমণ চালায়। পাকহানাদারদের এ আক্রমণে মুক্তিবাহিনী পিছু হটে খুলনা জেলার আশাসুনি থানার বড়দল ঘাঁটিতে ফিরে আসে।

কাদের সিদ্দিকীর নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধা হাবিবের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদল যমুনা নদীতে হানাদারদেও অস্ত্র বোঝাই ৭টি জাহাজের ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়। এতে জাহাজগুলো বালুচরে আটকে যায় এবং ১৪/১৫ জন খানসেনা নিহত হয় ও অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। জাহাজের লগবুগ ও মুভমেন্ট অর্ডারের হিসাব অনুসারে জাহাজগুলোতে এক লাখ কুড়ি হাজার বক্সে একুশ কোটি টাকার নানা ধরনের চাইনিজ, বৃটিশ ও মার্কিন অস্ত্রশস্ত্রের হিসেব পাওয়া যায়। মুক্তিযোদ্ধারা এ থেকে প্রচুর পরিমান অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে এবং নেয়া সম্ভব নয় এরূপ প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ জ্বালিয়ে দেয়।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার সম্পর্কে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ওপর প্রভাব বিস্তারের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব ও ২৪টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতি আবেদন জানান।

লন্ডনে পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হামিদুল হক চৌধুরী বৃটিশ মন্ত্রীদের সাথে সাক্ষাৎকালে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বর্তমানে যেসব অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছে, তা সেনাবাহিনীর সৃষ্ট নয়। এর জন্য দায়ী সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী (মুক্তিযোদ্ধা)।

ঢাকা শহর শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ সিরাজউদ্দিন ও সেক্রেটারী মোহাম্মদ মনসুর আলী প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যথাযথভাবে আজাদী দিবস পালনের আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, অবশ্যই আমাদেরকে দুষ্কৃতকারী ও বিছিন্নতাবাদীদের হাত থেকে দেশের আদর্শ ও অখন্ডতা রক্ষার জন্যে নতুন করে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে।

যুগান্তর পত্রিকার প্রতিবেদন:

মুক্তিবাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধির সাথে সাথে জঙ্গীশাহী ও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর সেনাসজ্জা তৎপরতা বাড়িয়ে তুলেছে।............
পাকজঙ্গীবাহিনী সীমান্তের ষাটটি চৌকিতে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করেছে। কিন্তু সেনাকমান্ডের নির্দেশ সত্ত্বেও ভারত নদী, জলপথ, পাহাড় দিয়ে বিস্তৃত ২৭০টি সীমান্ত ফাঁড়ির ওপর সফল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এখনো সফল হয়নি।
..........মুক্তিবাহিনী সমগ্র সীমান্ত বরাবর বাংলাদেশের পঞ্চাশ কিলোমিটার ভিতর পর্যন্ত নিজ নিয়ন্ত্রণে এনেছে এবং নানা অঞ্চলে অনেকখানি অভ্যন্তরে ও ঢুকে পড়েছে।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/এএস/আগস্ট ১২, ২০১৯)