কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা সৈকত এখন পর্যটকদের পদভারে মুখরিত। গত দু’দিন ধরে হাজার হাজার পর্যটক পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ছুটে আসছে কুয়াকাটায়। বুধবার সকাল থেকে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আগমনে যেন নব যৌবন ফিরে পেয়েছে কুয়াকাটা সৈকত।

সৈকতের সর্বত্রই পর্যটকদের উপচেপড়া ভীড়। সেই সাথে সৈকত ঘেষা কুয়াকাটার মনোরম সৌন্দর্যমন্ডিত নারিকেল বাগান, ঝাউ বাগান ও ইকোপার্কের বিস্তীর্ন এলাকা ও শতশত গাছ সাগরের ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাওয়ায় সৌন্দর্য পিপাসু পর্যটকদের মনে বিরাজ করছে চরম হতাশা।

ঈদকে ঘিরে আগামী সাতদিন কুয়াকাটার অধিকাংশ আলীশান হোটেল-মোটেল আগাম বুকিং হয়ে গেছে বলে হোটেল মালিকরা জানান। তবে অন্য ছোট হোটেলগুলোতে পর্যটকরা সিট পাচ্ছে। এদিকে বৃহস্পতিবার অস্বাভাবিক জোয়ারে কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়ক পথে তিনটি ফেরি ঘাটের গ্যাংওয়ে পানিতে দুই দফা তলিয়ে থাকায় কুয়াকাটাগামী পর্যটকদের দূর্ভোগে পড়তে হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরদিন বিকেল থেকেই পর্যটকরা কুয়াকাটায় আসতে শুরু করেছে। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় পর্যটকদের উপস্থিতি সমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো। সৈকতের জিরো পয়েন্ট, ইকোপার্ক, লেম্বুর চর, শুটকি পল্লী, মিস্ত্রীপাড়া, রাখাইন মহিলা মার্কেটসহ কুয়াকাটা সংলগ্ন গঙ্গামতি এলাকার বিভিন্ন আকর্ষনীয় স্পটগুলোতে আগত দর্শনার্থীর পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে। এসব পর্যটক কর্মজীবনের ব্যস্ত সময় কাটানোর পর ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থান দেখতে এসেছেন। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে।
কুয়াকাটায় ভ্রমনে আসা পর্যটক ইলা, রাফিন, সায়লা, নাহিদ, জায়ের ও কৃতিকা জানায়, এবারই তারা প্রথম কুয়াকাটায় এসেছেন। তবে তাদের কাছে দেশের অন্য পর্যটন স্পটের চেয়ে কুয়াকাটার সৌন্দর্য ও সাগরের নৃশংশতা মন ছুয়েছে। তারা জানায়, বিভিন্ন পত্রিকায় ও টিভি চ্যানেলে কুয়াকাটা নিয়ে অনেক রিপোর্ট দেখেছেন। কিন্তু বাস্তবে এখানকার সৌন্দর্য আরও বেশি আকর্ষনীয়। তবে সাগরের ভাঙ্গন দেখে তারা মর্মাহত। তাদের আশংকা আগামী বছর ঈদে কুয়াকাটা বেড়াতে এলে এ¦ই সৌন্দর্য দেখতে পাবেন কিনা। কেননা সৈকত যেভাবে ভাঙ্গছে তাতে এখনই সৈকত রক্ষায় এগিয়ে আসা উচিত।
ট্যুরিজম ব্যবসায়ী ট্যুরিষ্ট গাইড বিডি’র পরিচালক এস.এম. মাকসুদুল ইসলাম মাসুম সাংবাদিকদের জানান, সাগরের ঢেউয়ের তান্ডবে কুয়াকাটার সৈকত ক্রমশ ভাঙ্গছে। গত দু’দিন ধরে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। তবে নৌ-পথে পর্যটকদের ভ্রমনের জন্য আমাদের নৌ-তরী রয়েছে।
হোটেল গ্রেভারইন এর ইনচার্জ দেবাশীষ চন্দ্র দাস জানান, পর্যটক নির্ভরশীল হোটেল মোটেল গুলো রমজান মাসে একেবারেই বন্ধ ছিলো। কিন্তু ঈদের ছুটিতে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে।

কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই সঞ্জয় মন্ডল জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের পুলিশ বিভিন্ন স্পটে টহল রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাইনি।

(ওএস/অ/জুলাই ৩১, ২০১৪)