বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনার বেতাগীতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ৬১ নং গাবতলী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন সেই অভিযুক্ত শিক্ষক। ইতিমধ্যে যৌন নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন বলেও জানা গেছে।

সোমবার বেতাগী উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) মো. মিজানুর রহমান খান সেই বিদ্যালয়ে এসে অভিভাবকদের কাছ থেকে শিক্ষকের বিরুদ্ধে উন্মুক্ত অভিযোগ হিসেবে লিখিত নিয়ে গেছেন। যদিও অভিযোগ ওঠার পর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার কথা বলছেন স্থানীয়রা।

ওই স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরীক্ষার সময় প্রশ্নপত্রের উত্তর বলে দেয়ার লোভ দেখিয়ে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসছেন আলমগীর। তাছাড়া বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির ‘উর্ধ্বতন’ একজনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্কুল বরাদ্দের টাকাও আত্মসাৎ করেছেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন ক্লাসে ব্লাকবোর্ডে লেখানোর কথা বলে ছাত্রীদের সামনে ডেকে নিয়ে আপত্তিকরভাবে শরীরে হাত দেন। আবার প্রশ্নপত্রের সমাধান করে দেওয়ার কথা বলে একাকি লাইব্রেরিতে ডাকেন। সেজন্য ছাত্রীরা তাকে ভয় পায়। এমন শিক্ষক এখানে থাকলে ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দেবে।

এ বিষয়ে স্কুলের জমিদাতা ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. মুকুল মৃধার ছেলে মো. আসাদুল বলেন, প্রধান শিক্ষক যদি এসব না করে থাকেন তাহলে টাকার বিনিময়ে বিষয়টি সমাধান করতে চান কেনো?
বিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম নিরু বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন শিক্ষক থাকলে বাচ্চারা কোথায় লেখাপড়া শিখবে?

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিজাম উদ্দিন আকন বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে বলেছেন, যদি কেউ আমার বিরুদ্ধে কথা বলো তাহলে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) মো. মিজানুর রহমান খান বলেন, ৬১ নং গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে উন্মুক্ত অভিযোগ হিসেবে লিখিত আনা হয়েছে। সেই লিখিত পর্যালোচনা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।

অভিযোগ জানিয়ে ছাত্রীদের দেওয়া সাক্ষাৎকার সংবাদকর্মীদের হাতে রয়েছে বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সেটা আপনাদের ব্যাপার।

(এটি/এসপি/আগস্ট ৩০, ২০১৯)