বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনার বেতাগীর হোসনাবাদে জোরপূর্বক কিশোরী ধর্ষণের পর ওই ধর্ষিতার গর্ভে ফুটফুটে শিশু সন্তানের জন্ম গ্রহণ করে। এ নিয়ে মামলা পালটা মামলার পর ধর্ষক আসামী পলাতক রয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবার থেকে জানা গেছে। এদিকে পিতৃ পরিচয়ের জন্য সদ্য জন্ম নেওয়া শিশু সন্তান নিয়ে মা দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিন হোসনাবাদ গ্রামের ষষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ুয়া এক কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে একাধিক বার ধর্ষণ করে একই গ্রামের মো. কালাম বেপারীর ছোট ছেলে আক্কাস বেপারী। কিছুদিন এমন অবৈধ সম্পর্কের পর কিশোরী সাময়িক অসুস্থ হয়ে পরে। শারীরিক উন্নতির জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে জানা যায় কিশোরী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে পরলে ধর্ষক আক্কাসের পরিবারের প্রতি বিয়ের জন্য চাপ আসে। সমাজের একটা মহল থেকে কিছু আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংশা জন্য কিশোরীর পরিবারে প্রস্তাব আসে। এতে কিশোরীর পরিবার অসম্মতি জানান এবং ন্যায় বিচারের জন্য বরগুনা বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। মামলার খবর পেয়ে ধর্ষক ও আসামী এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। কিশোরীকে অন্তঃসত্ত্বা বাচ্চাসহ প্রাননাশের হুমকি দেয়। যার প্রেক্ষিতে ওই কিশোরীর পরিবার থেকে গত ২৮/০৭/২০১৯ খ্রিঃ তারিখ সংবাদ সম্মেলন করা হয় এবং ২৯/০৮/২০১৯ থ্রিঃ জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় ও অনলাইন সংবাদ সম্মেলনের খবর ছাপা হয়। কিশোরীর পরিবার থেকে বেতাগী থানায় অভিযোগ করেন।

এমন পরিস্থিতিতে ২৮ আগষ্ট বুধবার রাতে ধর্ষিতা কিশোরী একটি পুত্রসন্তানের মা হন। তিনি বলেন,‘আমি যে আমার পোলার একটা নাম রাখবো সেই সৌভাগ্যও আমার হয়নি। যেদিন আমি প্রসব বেদনায় ছটফট করছিলাম সেদিনও আমাকে মারার জন্য আমার ঘর দরজা কুপিয়ে গেছে আক্কাসের বাবা কালাম বেপারী। একটি রাজনৈতিক মহলের দাপটে তারা আমাদের এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে চলছে।আরো বলেন, না পেলাম স্বামীর মর্যাদা তারপরও সন্তানের মা। আমি আর কিছু চাই না আমার সন্তানের পরিচয় চাই এ বলে চিৎকার দিয়ে কেঁদে ফেলে তরুণী।’

যে বয়সে টিফিনের বক্স নিয়ে দৌড়ে স্কুলে যাওয়ার কথা সেই বয়সেই এক পুত্র সন্তানের জননী এই তরুণী। এক কথায় বলা যেতে পারে শিশুর কোলে শিশুর জন্ম। তবে নিস্পাপ শিশুটি যেন পিতৃপরিচয় পায় এমটাই দাবী পুরো এলাকাবাসীর।

তবে এমন সকল অভিযোগ অবান্তর ও অস্বীকার করে ধর্ষক আক্কাসের বাবা কালাম বলেন,‘ আমার মানসম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য এলাকার একটি কৃচক্রীমহল এমনটি করেছে। আমার ছেলে মিথ্যা মামলার কারনে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ’নবাগত সন্তানের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে বলেন, ও সন্তান আমার ছেলের জন্মের না। বেশ কিছুদিন ঐ মেয়ে তার বোনের বাড়িতে বেশ কিছুদিন ছিলো এবং তার বোন জামাইর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিলো। হতে পারে সন্তান তার বোন জামাইর জন্মের।’

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান খান বলেন,‘আমরা স্থানীয় ভাবে ঘটনার পর থেকেই ছেলে কর্তৃক মেয়েকে বিবাহের জন্য বলেছি। ছেলে পলাতক রয়েছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন থাকার যার কারনে কোন ধরণের মীমাংশা করানো সম্ভব হয়নি।’

(এটি/এসপি/সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯)