সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলুর রহমান ও প্রধান শিক্ষক তানিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলুর রহমান প্রধান শিক্ষক তানিয়া আক্তারের শ্বশুর। ফলে দুজনে মিলে লুটেপুটে খাচ্ছে বিদ্যালয়টি। ওই বিদ্যালয়ের পুরাতন সরকারি পরিত্যাক্ত ঘরের ইট দিয়ে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বসতবাড়ীর টয়লেট, ঘরের মেঝ নির্মাণ করেছেন। পরিচালনা কমিটিতে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক সহ তাদের নিজেদের লোকদের আধিক্য থাকায় তারা একে অপরের যোগসাজসে অবৈধ ভাবে ইট দিয়ে নিজেদের বাড়ির টয়লেট নির্মাণ ছাড়াও স্কুলের মাঠের পাশে গাছ কেটে নিয়ে আত্মস্বাতের অভিযোগ ওঠেছে।

এতে বিদ্যালয়টি আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এসব অনিয়ম দূর্নীতির সরেজমিন তদন্ত করে দোষিদের শাস্তির দাবীতে বলাইশিমুল ইউনিয়ন ০৪ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য মোঃ হাফিজুর রহমান কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গত ২১ আগস্ট দাখিলকৃত এই লিখিত অভিযোগটি ৭ দিনের মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম রব্বানীকে নির্দেশ দেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিয়াউল হক। সরেজমিন গিয়ে অভিযোগটির সুষ্ঠ তদন্ত করেন গোলাম রব্বানী।

অভিযোগের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিচালনা কমিটিতে প্রধান শিক্ষিকার শশুর সভাপতির দায়িত্বে আছেন। এছাড়া আরো কয়েকজন সদস্য রয়েছে নিজেদের মধ্যে। অনিয়ম দূর্নীতি সম্পর্কে বলেন, পুরাতন ঘরের ইট দিয়ে বসতবাড়ীর টয়লেট, মেঝ নির্মান ও স্কুলের গাছ কেটে নেয়ার ঘটনাটি সত্য।

তিনি বলেন, এই স্কুলের দাতা সদস্য হওয়ার কারনেই তারা প্রভাব বিস্তার করে এমনটি করছেন। তবে তদন্তে তারা নিজেদের দায় স্বীকার করে এলাকার লোকজনের উপস্থিতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, আমি তদন্তে যেসব বিষয় সত্য পেয়েছি, তা সব উল্লেখ করে কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করব।

উপজেলা শিক্ষা অফিসে সোমবার বিকেলে তদবির করতে আসা প্রধান শিক্ষক তানিয়া আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজের দায় অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমার শশুর। আমি তাকে বারবার নিষেধ করেছি পুরাতন ঘরের ইট নেয়ার জন্য, গাছ কাটার জন্য। কিন্তু তিনি আমার কথা শুনেননি। এখন এ নিয়ে আমাকে বিভিন্ন দিক থেকে অনেক কথা শুনতে হচ্ছে। আমি এখান থেকে বদলি হয়ে নেত্রকোনায় চলে যাব। এর পর যদি আমার ওপর থেকে জোটঝামেলা শেষ হয়। এদিকে জাতীয় শোক দিবস পালনের ক্ষেত্রেও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ ওঠেছে।

(এসবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৯)