চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : বিয়ের পর কাবিননামা রেজিস্টি না করায় চুয়াডাঙ্গার পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের কাজি নাসির উদ্দিনসহ তার তিন সহযোগিকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক বিপ্লব গোস্বামী বৃহস্পতিবার দুপুরে এ আদেশ দেন।

কারাগারে পাঠানো কাজি ও কাজির সহযোগিরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ২ নং ওয়ার্ডের কাজি নাসির উদ্দিন, তার সহযোগি আকরাম হোসেন, আব্দুল হালিম ও নাজমুল হক হিরা।

মামলার বিবরণে জানা গেছে- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের শিপন আলীর মেয়ে শিরিনা খাতুন গত ২৯ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় বলা হয়, শিরিনার স্বামী ফুলবাড়ি গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে হাবিবুর রহমান, তার পিতা শহিদুল ইসলাম ও মা কোহিনূর বেগম গত ৭ মার্চ যৌতুকের দাবিতে শিরিনাকে মারপিট করে আহত করে। এ মামলায় পুলিশ গত ১ মে হাবিবুরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। গত ৩ জুলাই চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে হাবিবুর অন্তবর্তিকালিন জামিন লাভ করে। জামিন শুনানীর সময় হাবিবুরের পক্ষে তার কৌশুলী দাবি করেন, শিরিনার সাথে হবিবুরের আদৌ বিয়ে হয়নি। জাল কাবিননামা তৈরি করে হাবিবুরকে ফাসানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এই মামলায় আসামি হাবিবুর রহমানের অন্তবর্তিকালিন জামিনে থাকার বিষয়ে আরো শুনানী এবং বিয়ের কাজি ও তার সহযোগিদের আদালতে হাজির থাকার জন্য দিন ধার্য ছিল। আদালতের আদেশক্রমে কাজি নাসির উদ্দিন, তার সহযোগি আকরাম হোসেন, আব্দুল হালিম ও নাজমুল হক হিরা আদালতে হাজির হন। জেলা ও দায়রা জজ বিপ্লব গোস্বামীর প্রশ্নের জবাবে কাজি নাসিরউদ্দিন বলেন, তিনি এ বিয়ের সাথে কোনোক্রমেই সংশ্লিষ্ট নন। তার সহযোগি আকরাম হোসেন তার সিল ও স্বাক্ষর জাল করে কাবিননামার সত্যায়িত অনুলিপি সরবরাহ করেছে। নাজমুল হক হিরা বলেন, তিনি মৌলভী হিসেবে এই বিয়ে পড়িয়েছিলেন এবং সেসময় কাজির সহযোগি আকরাম হোসেন ও আব্দুল হালিম উপস্থিত ছিলেন।

চুয়াডাঙ্গার পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন বলেন, আদালতে কাজী এবং তার সহযোগিদের বক্তব্যে প্রতীয়মান হয় যে, শিরিনা খাতুন ও হাবিবুর রহমানের মধ্যে বিয়ে সম্পন্ন হলেও তা রেজিস্ট্রি হয়নি। বরং আসামি হাবিবুরের সাথে যোগসাজস করেছেন কাজী ও তার সহযোগিরা। এ অবস্থায় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মামলার প্রধান আসামি হাবিবুর রহমানের জামিন বাতিল করেন এবং সেইসাথে কাজি ও তার সহযোগিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

(জেটএ/এইচআর/আগস্ট ০১, ২০১৪)