স্টাফ রিপোর্টার : ক্লাসে বই না নেয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীর কান ফাটিয়ে দিয়েছেন শ্রেণি শিক্ষক। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।

সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ‘সুন্নাহ ইন প্র্যাকটিসিন লাইফ’ কোর্সের ক্লাসে রিয়াদুস সালেহীন বই না নেয়ার কারণে ২০ শিক্ষার্থীকে ক্লাস থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ। এ সময় চার-পাঁচ শিক্ষার্থী ক্লাস থেকে বের হতে দেরি করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অধ্যাপক আব্দুর রশীদ ওই শিক্ষার্থীদের চড়-থাপ্পড় মারেন। এ সময় নাসির উদ্দিন নামে এক শিক্ষার্থীর বাম কানের পর্দা ফেটে রক্ত বের হয়। ওই কানে আগে তার অপারেশন করা হয়েছিল। নাসির বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, অধ্যাপক আব্দুর রশীদ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কারণে-অকারণে খারাপ ব্যবহার করেন। শিক্ষার্থীদের অপমানজনক কথা বলেন।

মারধরের বিষয়ে জানতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাসিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ঘটনা তো শুনেছেন।’ এর বেশি কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি। তবে তার সহপাঠীরা যা বলেছেন সেটা সত্য ঘটনা বলে স্বীকার করেন তিনি।

মারধরে অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেন, ‘আমার কোনো বক্তব্য নেই। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।’

এ বিষয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি একটু শুনেছি। বিষয়টি আরেকজন শিক্ষক মিটমাট করে দিয়েছেন। আমার কাছে ছেলেরা আসেনি।’

তিনি বলেন, এটা অনাকাঙ্ক্ষিত। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কারও গায়ে হাত তোলা ঠিক নয়। হয়তো রাগেরবশে তিনি এমনটি করেছেন। শিক্ষার্থী যদি আমার কাছে আসে তাহলে আমি এ বিষয়ে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করব।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ছাত্রী অভিযোগ করেন, তিনি গভীর রাতে আমাকেসহ আমার অনেক বান্ধবীকে ফোন দিয়ে উত্ত্যক্ত করেন। বলেন, মা! ডেঙ্গুর প্রভাব বেশি মশারি টাঙিয়ে ঘুমাবে। ফেসবুকে ছবি দিলে ‘সুন্দর হইছে মা!’ ইত্যাদি বলে কমেন্ট করেন।

অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রশীদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি। ক্লাসে তিনি দলীয় ক্ষমতার প্রভাব দেখান এবং শিক্ষার্থীদের তার অনুগত গুন্ডা বাহিনী দিয়ে শায়েস্তা করার হুমকি দেন।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯)