জামালপুর প্রতিনিধি : ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সভায় হাসপাতালের ভেতরে ক্যান্টিন ও ওষুধের দোকান দেওয়ার আলোচনার সূত্র ধরেই জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের ভেতরে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেছে প্রভাবশালীরা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করে এই নির্মাণ শুরু করায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, হাসপাতালের পরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও বন্ধ হচ্ছেনা এই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ। 

শুক্রবার বিকালে সদর থানার ওসি (তদন্ত) রাশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে সদর থানা পুলিশ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে করতে গিয়ে প্রভাবের মুখে উচ্ছেদ না করেই ফিরে আসতে বাধ্য হয়। তবে আপাতত স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. প্রফুল্ল কুমার।

অভিযোগ উঠেছে, ২৫০ শয্যার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের ভেতরে ক্যান্টিন ও ওষুধের দোকান দেওয়ার আলোচনা হয় হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটিতে। আলোচনা হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সভার এই খবর প্রকাশ হলে জেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের হোসেন শাহীন ও শহর আওয়ামীলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে হাসপাতালের ভেতরে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে।

এ নিয়ে রফিকুল ইসলাম বাবুল নামে একজন ব্যবসায়ী বৃহস্পতিবার সদর আসনের সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, হাসপাতালের পরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু এর পরেও থেমে নেই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের কাজ।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সরকারি নিয়মে হাসপাতালের ভেতরে ক্যান্টিন ও ওষুধের দোকান দিতে দরপত্রের মাধ্যমে প্রদান করা হলে সরকারের কোষাগারে অন্তত কয়েক লাখ টাকার রাজস্ব জমা হবে। প্রভাবশালী চক্রের সাথে যোগসাজশে ক্যান্টিন ও ওষুধের দোকান দেয়া হলে কেউ কেউ লাভবান হলেও সরকার বঞ্চিত হবে কয়েক লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম জানান, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয় রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে ক্যান্টিন চালানোর। কিন্তু কোন সিদ্ধান্ত হয়নি এখনো।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. প্রফুল্ল কুমার বৃহস্পতিবার রাতে এই স্থাপনা নির্মান বন্ধের নির্দেশ দিলেও তরিঘড়ি করে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে ওই প্রভাবশালীরা।

তিনি আরো বলেন, ব্যবস্থাপনা কমিটিতে রোগী কল্যান সমিতির মাধ্যমে কেন্টিন চালুর আলোচনা হলেও চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও স্থান নির্ধারিত হয়নি। ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সদর আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোজাফফর হোসেন দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি দেশে ফিরে এলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়া হবে।

(আরআর/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৯)