স্টাফ রিপোর্টার : অবশেষে উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বলে আগের পাঁচ ধাপের উপজেলা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি। এমনকি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন পরবর্তীতে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

শনিবার রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, ১৪ অক্টোবর ৮টি উপজেলায় যে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।

উল্লেখ্য, আগের পাঁচ ধাপের মধ্যে এই আট উপজেলায় নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। নানা সমস্যার কারণে ওইসব উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়। যেসব উপজেলায় নির্বাচন হবে- শেরপুর সদর, নেত্রকোনার আটপাড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর, নোয়াখালীর কবিরহাট ও চট্টগ্রামের সাতকানিয়া।

এর আগে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিকেল ৫টায় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দলের মহাসচিব বৈঠক থেকে বেরিয়ে বৈঠকের এ সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

আসামের নাগরিকপুঞ্জির বিষয়ে সরকারের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসামের নাগরিকপুঞ্জি নিয়ে সেখানকার মন্ত্রী, বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের যেসব বক্তব্য ভারতের বিভিন্ন পত্রিকায় বেরিয়েছে তাতে বলা হয়েছে যে, ১৯ লাখ যারা বাদ পড়েছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশ বাংলাদেশি নাগরিক। আমরা এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

ফখরুল বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সরকারি-আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের উদ্ধৃত্ত অর্থ সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনবে। এই থেকে এটাই প্রমাণিত হয়েছে আসলে সরকার অর্থনৈতিক দিক থেকেও দেউলিয়া হয়ে গেছে। এখন যেসব প্রতিষ্ঠানে তাদের জমাকৃত উদ্ধৃত্ত আছে তা কখনও কেউ হাত দিতে হয়নি। সরকার বলছে, সেটা তারা বিভিন্ন প্রজেক্টে ব্যয় করতে চায়।

তিনি বলেন, এটাতে সরকারের দেউলিয়াত্ব প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে। এতে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ব্যাংকগুলো, যেসব ব্যাংকে ওইসব প্রতিষ্ঠানের টাকা জমা আছে। যখনই টাকা নিয়ে যাবে তখন তারল্য সংকট দেখা দেবে ব্যাংকগুলোতে। এছাড়া যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ওইসব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন তাদের বেতন-ভাতা, পেনশন- গ্রাচুইটি সঠিকভাবে পরিশোধ করতে পারবে বলে আমরা মনে করি না, সমস্যা তৈরি হবে।

মহাসড়কে টোল আদায়ে সরকারের সিদ্ধান্তেরও নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও সেই অবস্থায় দাঁড়ায়নি যে, রাস্তার ওপর টোল আদায় করতে হবে। জনগণের ওপর আরও একটা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে তার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল। এ বিষয়ে নয়াপল্টনের কার্যালয়ে বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করবে বিএনপি।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল ম্ঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৯)