আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চাঁদের পৃষ্ঠ ছোঁয়ার আগেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ভারতের মহাকাশ যান চন্দ্রযান-২ এর অবতরণকারী যান বিক্রমের খোঁজ পাওয়ার দাবি করেছে দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। রোববার সংস্থাটির প্রধান কে সিভান বলেছেন, চন্দ্র পৃষ্ঠে চন্দ্রযান-২ এর অবতরণ যান বিক্রমের অবস্থান শনাক্ত কর হয়েছে। বেঙ্গালুরুর গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে এই যানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চলছে।

দেশটির বার্তাসংস্থা এএনআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরোর প্রধান কে সিভান এসব কথা বলেন। এর আগে শনিবার ভোর রাতের দিকে চাঁদের দক্ষিণ পৃষ্ঠে অবতরণের আগ মুহূর্তে ভারতীয় মহাকাশ যান চন্দ্রযান-২ এর অবতরণকারী যান বিক্রমের সঙ্গে কন্ট্রোল রুমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

সিভান বলেছেন, আমরা চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণকারী যান বিক্রমের অবস্থান শনাক্ত করেছি। এই অবতরণ যানের থারমাল ছবি তুলেছে অরবিটার। তবে বিক্রমের সঙ্গে এখনো যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি। আমরা যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছি। খুব শিগগিরই যোগাযোগ করা সম্ভব হবে।

গত ২২ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে চন্দ্রযান-২। শনিবার সকালের দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরোর এক বিজ্ঞানী দেশটির বার্তাসংস্থা আইএএনএসের কাছে দাবি করেছিলেন, বিক্রম ল্যান্ডারটি ধ্বংস হলেও অরবিটার হিসেবে চন্দ্রযান-২ এর ৯৫ শতাংশই অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। সেটি চাঁদের নির্দিষ্ট কক্ষপথে সফলভাবে ঘুরছে।

চন্দ্রযান-২ এর চাঁদের পৃষ্ঠ ছোঁয়ার মিশনের মেয়াদ এক বছর। ইসরোর ওই বিজ্ঞানী আশা প্রকাশ করে বলেন, এক বছরের মিশনে চন্দ্রযান-২ চাঁদের বেশ কিছু ছবি তুলে ইসরোর গবেষণা কেন্দ্রে পাঠাতে পারবে।

মহাকাশযান চন্দ্রযান-২ তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। প্রথমটি অরবিটার; যার ওজন ২ হাজার ৩৭৯ কেজি এবং পে লোডস রয়েছে ৮টি, দ্বিতীয়টি ল্যান্ডার বিক্রম; ওজন ১ হাজার ৪৭১ কেজি, পেলোডস রয়েছে চারটি এবং সর্বশেষ অংশ রোভার প্রজ্ঞান, যার ওজন ২৭ কেজি; পে লোডস আছে দুটি।

গত ২ সেপ্টেম্বর অরবিটার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ল্যান্ডার বিক্রম। ভারতের ভারী লিফট রকেট জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল মার্ক-থ্রিতে চড়ে ৯৭৮ কোটি টাকার চন্দ্রযান-২ চাঁদের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল।

কয়েক ধাপে পৃথিবীর কক্ষপথে থেকে বেরিয়ে, সেটি প্রবেশ করে চাঁদের কক্ষপথে। শনিবার ভোররাতে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামার কথা ছিল ল্যান্ডারের। ভোর ৬টার দিকে সেই ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে আসার কথা ছিল রোভার প্রজ্ঞান। শুক্রবার দিবাগত রাতে চন্দ্রযান-২ এর চন্দ্রপৃষ্ঠে নামার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

ইসরোর চেয়ারম্যান শিভান বলেন, এই অভিযানের সবকিছুই পরিকল্পনামাফিক চলছিল। ২ দশমিক ১ কিলোমিটার পর্যন্ত চন্দ্রযানের স্বাভাবিক কার্যক্রমের তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ল্যান্ডারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় অভিযান থমকে গেছে।এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৯)