বিনোদন প্রতিবেদক : বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সফল ব্যক্তিত্ব সোহেল রানা।বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবে ব্যাপক সফল হয়েছেন তিনি। সোহেল রানার জন্ম ১৯৪৭ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকাতে। তিনি শিক্ষা জীবনে ছিলেন একজন সফল ছাত্রনেতা ।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মুক্তিযুদ্ধে। তাঁর জন্ম ঢাকাতে হলেও পৈতৃক বাসস্থান বরিশাল জেলায়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনি চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত হন, প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবে মাসুদ পারভেজ এবং অভিনেতা হিসেবে সোহেল রানা নাম ধারণ করে। প্রযোজক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন পারভেজ ফিল্মস এবং এই প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে চাষী নজরুল ইসলাম এর পরিচালনায় নির্মাণ করেন বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ওরা ১১ জন।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ২০০৯ সালে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যপদ গ্রহণ করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। আগামী ৩০ নভেম্বর জাতীয় পার্টির কাউন্সিলে সোহেল রানা মহাসচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক তৃনমূলের নেতাকর্মিরা এমনটাই চাচ্ছেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর দলের মধ্যে শুরু হয়েছে ব্যাপক টানাপোড়েন। ইতিমধ্যে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করেছিল আবারও ভেঙ্গে যেতে পারে জাতীয় পার্টি । জিএম কাদের এবং রওশন এরশাদের পাল্টা পাল্টি চেয়ারম্যান ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। এই অবস্থা নিরসনের জন্য শনিবার বৈঠকে বসেন জিএম কাদের ও রওশন এরশাদ। দুই পন্থি নেতাদের বৈঠকে সমঝোতা হয়েছে। শ‌নিবার রা‌তে দেবর ও ভাবীর প‌ক্ষের নেতারা দীর্ঘ বৈঠক শে‌ষে এ সম‌ঝোতায় উপনীত হন।

সমঝোতার সত্যতা স্বীকার ক‌রে রওশনপন্থী দ‌লের প্রেসি‌ডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম জানান, সব বিষ‌য়ে আমরা ঐক্যম‌তে পৌ‌ছে‌ছি। বৈঠ‌ক সফল হ‌য়ে‌ছে জা‌নিয়ে দ‌লের প্রে‌সি‌ডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশ‌তি ব‌লেন, ম্যাডাম রওশন এরশাদ ও জিএম কা‌দের এর যৌথ নেতৃ‌ত্বে জাতীয় পা‌র্টি প‌রিচা‌লিত হ‌বে। এর আগে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে পার্টির জাতীয় কাউন্সিলের ঘোষণা দেন জি এম কাদের। আগামী ৩০ নভেম্বর দলের জাতীয় কাউন্সিল ডেকেছেন তিনি। জাতীয় পার্টির কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণার পর নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূল নেতাকর্মিরা চাচ্ছে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নায়ক সোহেল রানা মহাসচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হয়ে পার্টির হাল ধরুক।

এ বিষয়ে সোহেল রানা বর্তমান জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক সঙ্কটসহ আগামী দিনের নানা পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আমার নেতা হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর দলের মধ্যে যে টানাপোড়ন সৃষ্টি হয়েছে তা তৃণমূল কখনো চায়নি। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সবসময় চেয়েছেন ঐক্যবদ্ধ থাকতে। কেউই দলের বিভেদ পছন্দ করছিলো না। দলের নেতাকর্মীসহ আমরা সবাই মনেপ্রাণে চাচ্ছিলাম দলের মধ্যে যে বিভেদ তৈরি হয়েছে তা দূর হয়ে যাক।

আল্লাহর অশেষ রহমতে গতকাল রাতে একটি সমঝোতা হয়েছে। ইতিমধ্যে পার্টির কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা দেয়ার পর দেশের বিভিন্নস্থান থেকে নেতাকর্মীরা আমাকে ফোন করছে পার্টির মহাসচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য। আমি এখন পর্যন্ত কাউকে না করিনি। যদি দলের তৃণমূল নেতাকর্মীসহ সবাই চায় আমি এই পদের জন্য যোগ্য একজন, তাহলে তাদের সন্মান রক্ষা করা আমার নৈতিক দায়িত্ব বলেই আমি মনে করবো। সবাই মিলে যদি আমাকে পছন্দ করে তবে আমি দলের জন্য কাজ করবো। দলকে আরো শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, ঐক্যবদ্ধ আছি। আমি যে পদেই থাকিনা কেন দলের জন্য সব সময় কাজ করছি করে যাবো।

(এম/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৯)