উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : কুমিল্লায় পাকহানাদার বাহিনী মুক্তিবাহিনীর মন্দভাগ অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। মুক্তিবাহিনী বীর বিক্রমে পাকসেনাদের আক্রমণ প্রতিহত করে। পাকবাহিনীর দুই কোম্পানী সৈন্য পরাজয়ের আক্রোশে ফেরার পথে মুক্তিবাহিনীর মইনপুর অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়।

প্রায় দু‘ঘন্টার এ যুদ্ধে ৪০ জন পাকসৈন্য হতাহত হয়। অপরদিকে ৯ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হয়। পাকিস্তানি গোলান্দাজ বাহিনীর প্রবল গোলাবর্ষণে মুক্তিযোদ্ধা দল তাদের অবস্থা পরিত্যাগ করে ৬০০ গজ পিছিয়ে বায়েকের নিকট জেলা বোর্ডের রাস্তায় নতুন অবস্থান স্থাপন করে।

সিলেটে মুক্তিবাহিনী শাহবাজপুর-বিয়ানীবাজার সড়কে পাকহানাদার বাহিনীর টহলদার দলকে এ্যামবুশ করে।এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।

৮নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর ৪০ জন যোদ্ধার একটি দল সাইলকুপা থানার আলফাপুর গ্রামে পাকবাহিনীর এক কোম্পানী সৈন্যকে আক্রমণ করে। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর ৫৩ জন সৈন্য ও ২০ জন রাজাকার নিহত হয়। অপরদিকে একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের কাছ থেকে ১৬টি রাইফেল ও ৭টি গোলার বাক্স দখল করে।

পাকহানাদার বাহিনী দালাল রাজাকারদের নিয়ে কয়েকটি নৌকায় করে সুনামগঞ্জ সদর থানার ভাঁদের টেক মুক্তিবাহিনী অবস্থানের দিকে অগ্রসর হয়। এ খবর পেয়ে মুক্তিবাহিনী যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয় এবং তাদের আওতায় আসার সাথে সাথে পাকবর্বরদের ওপর গোলাবর্ষণ শুরু করে। প্রায় দেড় ঘন্টা যুদ্ধের পর পাকসেনারা সম্মুখে এগুতে না পেরে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর অনেক সৈন্য হতাহত হয়। অপরদিকে একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

৩নং সেক্টরে তেলিয়াপাড়ায় মুক্তিবাহিনী পাকসৈন্যদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এই যুদ্ধে ৯ জন পাকসেনা নিহত হয়।

ঔপনিবেশিক দেশ ও জনগণকে স্বাধীনতা দানের ঘোষণা কার্যকরিকরণ সংক্রান্ত জাতিসংঘ বিশেষ কমিটির সভায় বিশ্বশান্তি পরিষদের ভারতীয় প্রতিনিধি কৃষ্ণ মেনন বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনে ঐ কমিটির হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, বাংলাদেশের ঔপনিবেশিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

বাংলাদেশ ফোর্স হেডকোয়ার্টার-এর গণসংযোগ বিভাগ থেকে প্রকাশিত ‘যুদ্ধ বিষয়ক বুলেটিন’- এ বলা হয় : মুক্তিবাহিনী শাসিআলী, গাজীপুর, পানছড়া, জামবাড়ি ও কুটিশ্বরে শত্রুবাহিনীর ৪৫ জনকে নিহত এবং ১৫ জনকে আহত করে।

পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর গোলাম ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ প্রশ্ন ও বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিশালী লবিকে মোকাবেলা করার জন্য পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলে হামিদুল হক চৌধুরী, মৌলবী ফরিদ আহমদ ও বিচারপতি হামুদুর রহমান, ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, এ.কিউ.এম. শফিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আখতার উদ্দিন, আব্দুস সবুর ও ফজলুর কাদের চৌধুরীকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৯)