স্টাফ রিপোর্টআর : শরিক ছোট দলগুলোকেও বিএনপিতে একীভূত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সদ্যবিলুপ্ত পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান রিটা রহমান। তবে রিটা রহমানের এই আহ্বানের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক কয়েকটি দলের নেতারা।

রবিবার পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশ বিলুপ্ত করে রিটা রহমান তার দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপিতে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত জানান। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপির এখন সংকটকাল চলছে, আমি মনে করি শরিক যে ক্ষুদ্র দলগুলো আছে তাদেরও বিএনপিতে একীভূত হওয়া উচিত।’

পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশ বিলুপ্ত করে বিএনপিতে একীভূত হওয়ার অফার কি বিএনপি থেকে দেয়া হয়েছে নাকি আপনারাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে রিটা বলেন, ‘না, বিএনপি আমাদের অফার করেনি। আমরাই বিএনপিকে বলেছি, এটা আরও আগে থেকেই বলেছি, জানুয়ারি থেকেই আমরা বিএনপি মহাসচিবকে বলেছি। সেটা এখন বাস্তবায়ন হলো।’

বিএনপিতে যোগ দিলেন, এখন দলে আপনার পদ-পদবি কী হবে, সে বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি বা আপনার কোনো প্রত্যাশা রয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, এমন কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি, আমি কাজ করতে চাই। আমি কাজ করতে পারব, তাই যোগ দিয়েছি। দল কী করবে এটা দলের বিষয়।’

‘পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশ বিলুপ্ত করে আপনারা বিএনপিতে একীভূত হলেন, এর মাধ্যমে রাজনৈতিক মহলে এমন বার্তা যায় কি-না যে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের কার্যকারিতা নেই বা জোটের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেছে’, জবাবে রিটা বলেন, ‘আপনারা তো জানেন, ২০ দলীয় জোট সেভাবে সক্রিয় নেই।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসন থেকে জোটগতভাবে আপনি ধানের শীষের মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবার ওই আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপির হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তখন রংপুর বিএনপি নেতাকর্মীদের সহযোগিতা কেমন পেয়েছিলেন, এখন কেমন সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন? জবাবে রিটা বলেন, ‘ছোটখাটো মতবিরোধ তো থাকেই। তখনও সহযোগিতা পেয়েছি। এখনও পাব। এবার ইভিএমে নির্বাচন হবে। সেবার তো সরকার কারচুপি করেছে। সরকার যদি নির্বাচনে কোনো প্রকার কারচুপি না করে তাহলে নেতাকর্মীদের সহযোগিতা এবং ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত হব।’

এদিকে বিএনপির শরিক ক্ষুদ্র দলগুলোকে বিএনপির সঙ্গে একীভূত হওয়ার যে আহ্বান রিটা রহমান জানিয়েছেন সে বিষয়ে ২০ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘উনি যেটা ভালো বুঝেছেন, সেটা করেছেন, এটা ওনার আহ্বান, বিএনপি ভালো বুঝেছে ওনাকে নিয়েছে। বিএনপি আমাদের এমন আহ্বান জানায়নি এবং আমাদেরও এমন চিন্তা নেই।’

ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘উনি গেছেন, ওনাকে ধন্যবাদ। কিন্তু ওনার আহ্বান জানানো ঠিক হয়নি। আহ্বান জানানোর কোনো প্রয়োজন ছিল না, যার যার পার্টি তার তার ব্যাপার। তাছাড়া উনি আমাদের ২০ দলের বাইরে ছিলেন। আমাদের ২০ দলীয় জোট ঠিকই আছে। উনি আমাদের জোটের ২২ নম্বর দল ছিলেন।’

বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ‘উনি আমাদের ২০ দলীয় জোটের ছিলেন না। আমরা আমাদের নীতি-আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি। বিএনপির সঙ্গে আমাদের জোট। আমরা বিএনপির সঙ্গে জোটে থাকব কি থাকব না এটা আমাদের বিষয়।’

ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি বলেন, ‘উনি তো বিএনপিরই লোক, বিএনপিতেই আছেন। ওনার বাবা মশিউর রহমান যাদু মিয়া ভাসানী বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। দল বিলুপ্তি ওনাদের স্বভাব।’

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৯)