রূপক মুখার্জি, নড়াইল : মাটির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমানোর পাশাপাশি চাষাবাদেও প্রতিবন্ধকতাও তৈরী করে পলিথিন। এ জন্য প্রায় দেড় যুগ আগে পলিথিনের উৎপাদন, বিপনন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে সরকার। তথাপিও বন্ধ হয়নি পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার। বরং প্রতিনিয়তই পলিথিন ব্যবহারের ক্ষেত্র বিস্তৃত হচ্ছে। হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন। 

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন নজরদারি না থাকায় দিন দিন পলিথিনের ব্যবহার যেমন বাড়ছে তেমনিই প্রকাশ্যে চলছে পলিথিন বেচাকেনা। নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ‘কুম্ভ কর্নের ঘুম’ কবে ভাঙ্গবে-এমন প্রশ্নে সচেতন মহলের।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, নড়াইল জেলার ৪টি থানা এলাকার সর্বত্রই নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব হয়ে পড়েছে প্রকাশ্যে চলছে পলিথিনের অপ্রতিরোধ্য ব্যবহার। জেলার এমন কোন হাট-বাজার খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে পলিথিন নেই। খাবারের হোটেল, চাল, ডাল, মাছ, মাংস থেকে শুরু করে শাক-সবজি বেচাকেনাতেও ব্যবহৃত হচ্ছে পলিথিন।

পলিথিনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েছে। এক কথায় মাটি ও পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর পলিথিনে ছেঁয়ে গেছে নড়াইল জেলা। সবচেয়ে অবাক করা বিষয়টি হলো, পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই কোন তৎপরতা।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বিগত ২০০২ সালে তৎকালিন সরকার পলিথিনের উৎপাদন, বিপনন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে একটি আইন প্রণয়ন করে। এটি বাস্তবায়নে পরিবেশ সংরক্ষন আইন ১৯৯৫ এর ৬(ক) ধারাটি সংযোজন করা হয়। আইনে ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোন ব্যক্তি নিষিদ্ধ পলিথিন সামগ্রী উৎপাদন, আমাদনি বা বাজারজাত করেন, তাহলে ওই ব্যক্তিকে ১০ বছরের কারাদন্ড বা ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা এমনকি উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন। তবে আইনের তোয়াক্কা না করেই প্রশাসনের সামনে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে পলিথিন। এ ব্যাপারে কথা হয় লোহাগড়া পৌর শহরের সচেতন নাগরিক আব্দুল হাই সরদারের সাথে।

তিনি জানান, সরকার পলিথিন নিষিদ্ধ করেছে দেড় যুগ আগে। অথচ ঢাকার কাওরান বাজার এলাকায় পলিথিনের পাইকারি বাজার গড়ে উঠেছে। সেখান থেকে সারা দেশে পলিথিন ছড়িয়ে পড়ছে। এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের আশু নজরদারি ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা পলিথিনের অতিরিক্ত ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, খুব শীঘ্রই পলিথিনের বেচাকেনা ও ব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

(আরএম/এসপি/সেপ্টের ০৯, ২০১৯)