শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : ধানের জেলা দিনাজপুরে বাণিজ্যিকভিত্তিতে জনপ্রিয় সুস্বাদু-পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ বিদেশি  ফল ‘ড্রাগন’ চাষ হচ্ছে। এ ফল চাষ করে ঘুরছে অনেকের ভাগ্যে পরিবর্তনের চাকা। দিনাজপুরে মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের জন্য উপযোগি বলেও জানাচ্ছেন,কৃষিবিদরা। সহযোগিতা পেলে এ অঞ্চলে ড্রাগন চাষের বিপ্লব সাধিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন অনেকেই।

আর এখন আর স্বপ্ন নয়; বাস্তবে দিনাজপুরে বিস্তৃর্ণ ক্ষেতজুড়ে শোভা পাচ্ছে জনপ্রিয় সুস্বাদু-পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ বিদেশি ফল ‘ড্রাগন’। সারিবদ্ধভাবে আরসিসি পিলারে বাইকের পুরোনো টায়ারে জড়িয়ে থাকা গাছে ঝুলছে ড্রাগন ফল।এ ফল চাষ করে অনেকে আশাতীত ফলনও পাচ্ছেন। ফল বিক্রি হচ্ছে,ক্ষেত থেকেই।

পাইকারেরা ক্ষেত থেকেই নগদ টাকায় ফল ক্রয় নিচ্ছে যাচ্ছেন। এতে লাভবান কৃষক। বিরামপুরের কৃষক মতিয়ার জানালেন,তিন দু;বিঘা জমিতে গত বছর পরীক্ষামূলক ভাবে ড্রাগন চাষ করেছিলেন। ভালো ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় এবার আরো দেড় বিঘা জমিতে সম্প্রসারণ করেছেন ড্রাগন ফলের চাষ।

দিনাজপুরের ড্রাগন ফল জেলার চাগিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। দৃষ্টি নন্দিত এ গাছ ও ফল দেখে অনেকেই থমকে দাঁড়া্েচ্ছ। ড্রাগন ফল চাষে সফলতার কাহিনী শুনে অনেকে ছুঁটে আসছে। আগ্রহ প্রকাশ করছেন,এ ফল চাষের।

বছরের প্রায় সব মৌসুমেই ড্রাগন গাছে ফলন হওয়ায় বিশেষত: বেকার কৃষকরা ঝুঁকছেন ড্রাগন ফল চাষে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও অনাবাদি-পরিত্যক্ত জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করছেন। যেমন চাষ করছেন দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনিকল কর্তৃপক্ষ। কাহারোল উপজেলার কান্তা ফার্মে ১৬ একর জমিতে রাতা ড্রাগন ফলের চাষ করছেন। এমনটাই জানালের চিনিকরের সিআইসি কাজল চন্দ্র দাস।

চলতি বছর দিনাজপুরে ৭০ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ হয়েছে। প্রতি কেজি ড্রাগন ফল স্থানীয় বাজারে সাড়ে ৩’শ টাকা থেকে সাড়ে ৪’৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এ ফল চাষে কৃষককে কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দিচ্ছেন,হর্টি কালচার সেন্টার ও কৃষি বিভাগ।

দিনাজপুর হর্টি কালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ এবং জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অদিদপ্তরের উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল জানিয়েছেন,দিনাজপুরে মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের জন্য উপযোগি বলের কৃষিবিদরা জানাচ্ছেন। সুষ্ঠু বাজারজাতের ব্যবস্থা করা গেলে উদ্যোগী কৃষকদের মুখে হাসি ফুটবে বলে মনে করছেন তারা।

দিনাজপুরে ড্রাগন ফল চাষাবাদ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই ড্রাগন ফল চাষ করে ঘুরছে,অনেক কৃষকের ভাগ্যেও চাকা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত খাকলে এবং এই ড্রাগন ফলের ভালো দাম পেলে এ অঞ্চলে ড্রাগন চাষেন পরিধি আরো বেড়ে যাবে এমনটাই মন্তব্য করছেন,কৃষিবিদরা।

(এসএএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯)