স্টাফ রিপোর্টার : ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদন পুরোপুরি সত্য নয়, তবে তাদের রিপোর্ট একেবারে উড়িয়েও দিচ্ছি না। ভূমি রেজিস্ট্রেশন বিভাগে কিছু দুর্নীতি হয়, তবে এ অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আরও যেসব বিষয়ে উন্নতি দরকার সেগুলো আমরা করব।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারে সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, টিআইবির রিপোর্টটি আমার নজরে এসেছে। তাদের রিপোর্টটিকে পুরোটা সমর্থন করতে পারছি না। তবে ভূমি অফিসের জটিলতা এবং সমস্যা দীর্ঘ দিনের। অনেক ক্ষেত্রেই আগের চেয়ে বর্তমানে বেশ কিছু উন্নতি হয়েছে। টিআইবি যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সেটা কখনকার -সেটা তারা উল্লেখ করেনি।

মন্ত্রী বলেন, টিআইবি ভূমি রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি উল্লেখ করেছে। রেজিস্ট্রেশন বিভাগের অংশটা নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে। দুঃখজনকভাবে এখানে একটা ভুল ধারণা রয়েছে। এটা কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয়ের আন্ডারে না, এটা হচ্ছে আইন মন্ত্রণালয়ের আন্ডারে। রেজিস্ট্রেশন বিভাগ যেহেতু আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে নয়, তাই আমি এখানে হাত দিতে পারছি না।

তিনি বলেন, দুর্নীতির বিষয়টি আগের চেয়ে তুলনা করলে অনেক পরিবর্তন নিয়ে এসেছি। মানুষ কিছুটা হলেও এখন সেবা পাচ্ছে। এখন আমরা অনলাইন ডাটাবেজে সাড়ে তিন কোটি খতিয়ান আপলোড করেছি। এসবের জন্য মানুষকে আগে অনেক হয়রানি পোহাতে হত। এখন আর হয়রানি পোহাতে হয় না।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, টিআইবির কথা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছি না। তবে তারা যেসব সমস্যা তুলে ধরেছেন তার অনেকগুলোই আমরা উন্নয়ন করেছি। এ উন্নয়নটা আমাদের অব্যাহত রয়েছে।

‘ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমির দলিল নিবন্ধন সেবা জনগুরুত্বপূর্ণ এবং সরকারের রাজস্ব আহরণের অন্যতম উৎস হলেও সেবার যুগোপযোগী মান উন্নয়নে আইনি, পদ্ধতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে যথাযথ পরিকল্পনা ও উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে।

দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনটি মনে করে, ভূমি নিবন্ধন সেবার প্রতিটি পর্যায়ে সেবার মান আগের চেয়ে না বেড়ে বরং কমেছে। ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির উপস্থিতি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। আর এ ক্ষেত্রে সরকার ও সেবাগ্রহীতা উভয়পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, এলাকা বিশেষে ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবায় ধরণ অনুযায়ী এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ ও নিয়মবহির্ভূত লেনদেন হয়। দলিল নিবন্ধনে ১ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা, দলিলের নকল উত্তোলনে ১ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা, দলিল নিবন্ধন প্রতি দলিল লেখক সমিতিকে ৫শ’ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯)