স্বাস্থ্য ডেস্ক : আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) আয়োজনে আগামী বছরের জানুয়ারিতে পঞ্চদশ ডায়ারিয়া ও পুষ্টিবিষয়ক এশীয় সম্মেলন (এসকড) অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানী ঢাকার প্যান-প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ২৮ থেকে ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এ সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করবেন। এ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘টাইফয়েড, কলেরা ও অন্যান্য আন্ত্রিক রোগের সঙ্গে পুষ্টি-সংশ্লিষ্ট ব্যাধির সম্পর্ক : মানবিক বিপর্যয়ের যুগে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ’।

বাংলাদেশসহ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর শিক্ষার্থীরা সম্মেলনে নিবন্ধনের জন্য মূল্যছাড় পাবেন। সম্মেলনে অংশ নিতে নির্বাচনের ভিত্তিতে সীমিতসংখ্যক নবীন বিজ্ঞানীকে ভ্রমণ অনুদান (ট্র্যাভেল গ্রান্ট) প্রদান করা হবে।

বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশ থেকে অংশগ্রহণকারীদের নিবন্ধন ও গবেষণা সারসংক্ষেপ (অ্যাবস্ট্রাক্ট) জমা দেয়ার জন্য (৩০ সেপ্টেম্ববের মধ্যে) এসকড ২০২০-এর ওয়েবসাইট (www.ascodd.net)) এখন উন্মুক্ত।

আইসিডিডিআরবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সম্মেলনের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য এবং তাৎপর্য বর্তমান সময়ের দুটি আন্ত্রিক ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ- কলেরা ও টাইফয়েডকে ঘিরে, যা বিশ্বব্যাপী বছরে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষকে আক্রান্ত করে এবং ৩ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সম্মেলনে আন্ত্রিক সংক্রমণ, পুষ্টি, নীতি এবং প্রচলিত অনুশীলনের সাম্প্রতিক বিষয়গুলোর ওপর আলোকপাত করা হবে।

এ ক্ষেত্রে, বর্তমান বিশ্বের চাহিদার কথা বিবেচনা করে সম্মেলনে চারটি বিশেষ সিম্পোজিয়াম রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো- টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন : এশিয়া ও আফ্রিকাতে ব্যবহারের সম্ভাবনা, ২০৩০ সালের মধ্যে কলেরা নির্মূলকরণ : উদ্যোগ এবং চ্যালেঞ্জ এনভায়রনমেন্টাল এন্টারোপ্যাথি, আন্ত্রিক মাইক্রোবায়োটা, শৈশবকালীন অপুষ্টি, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ এবং আন্ত্রিক সংক্রমণের চিকিৎসার ওপর এর প্রভাব।

জানা গেছে, ১৯৮২ সালে আইসিডিডিআরবি প্রথমবারের মতো ঢাকায় ডায়ারিয়া ও পুষ্টিবিষয়ক সম্মেলনের অয়োজন করেছিল। তারপর থেকে এসকড নবীন গবেষক এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে জ্ঞান বিনিময়, ধ্যানধারণার আদান-প্রদান এবং পারস্পরিক সহযোগিতার সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে আসছে। ১৯৮২ সালে, সম্মেলনের তাৎপর্যের কথা বিবেচনা করে এশিয়াজুড়ে এর ব্যাপ্তি বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল, সে অনুযায়ী ১৯৮৩ সালে ভারতীয় গবেষকরা এবং কলকাতার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টারিক ডিজিজ এ উদ্যোগে যোগ দেয়।

বিগত চৌদ্দটি সম্মেলন এশীয় আটটি দেশে, বাংলাদেশ (৩ বার), ভারত (৩ বার), থাইল্যান্ড (২ বার), নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া (২ বার) এবং ফিলিপাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

আইসিডিডিআরবির অ্যান্টারিক অ্যান্ড রেসপিরেটরি ইনফেকশন্স ইউনিটের সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও এসকডের সভাপতি ড. ফিরদৌসী কাদরী মনে করেন যে, সম্মেলনটি অংশগ্রহণকারীদের গবেষণার ক্ষেত্রে অপরিসীম সুযোগ বয়ে আনবে।

তিনি বলেন, ‘সতের বছর পর এই সম্মেলনটি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এটি আন্ত্রিক রোগ এবং পুষ্টিবিষয়ক গবেষকদের জ্ঞান বিনিময়, ধ্যানধারণার আদান-প্রদান এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সাম্প্রতিক কাজ সম্পর্কে জানার বিরল সুযোগ সৃষ্টি করবে। আমি বিশ্বাস করি, বৈজ্ঞানিক সাধনা জোরদার করতে এই সম্মেলন তাদের ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করবে।’

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের পাশাপাশি স্পনসররা এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।

এ ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) প্রতিনিধি, চিকিৎসক, আন্ত্রিক ব্যাকটিরিয়া রোগে আগ্রহী চিকিৎসক শিক্ষার্থীরা এই প্লাটফর্ম থেকে বিশ্বব্যাপী জ্ঞান আহরণ এবং নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার সুযোগ অর্জন করতে পারবেন।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৯)