আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রথমে গায়ে জ্বর ও পেটে ব্যথা, পরে অনবরত বমি। এসব উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৩০ বছর বয়সী আমিনা মমিন। কয়েক দিন পর তিনি মারা যান। এখানেই শেষ নয়, তাকে যে চিকিৎসক ও নার্স চিকিৎসা দিয়েছিলেন, কিছুদিন পর একই উপসর্গ দেখা যায় তাদের মধ্যে। তারাও মারা যান। এমন ঘটনা ঘটেছে আজ থেকে আট বছর আগে ভারতের গুজরাটে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ জানিয়েছে, ওই তিনজন ‘ক্রিমিয়ান-কঙ্গো হেমোরেজিক ফিভার’ সংক্ষেপে ‘কঙ্গো ফিভারে’ আক্রান্ত হয়ে মারা যান। প্রায় এক দশক পর কয়েকদিন আগে গুজরাটে আরও দুজন মারা যান এ রোগে।

নতুন করে আরও দুজন একই রোগে মারা যাওয়ায় কঙ্গো ফিভার এখন ভারতে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। রাজ্য সরকার ১৩৪ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরালজিতে (এনআইভি বা নিভ) পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় আক্রান্ত এলাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর জন্য একটি টিম পাঠানো হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন রাজস্থানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রঘু শর্মা। পাশাপাশি এ রোগ নিয়ন্ত্রণে আক্রান্ত এলাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামাদি পাঠানোর কথাও জানান তিনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এঁটেল পোকা (এক ধরনের রক্তশোষক) কামড়, আক্রান্ত মানুষ বা গবাদিপশুর রক্ত ও টিস্যুর মাধ্যমে ছড়াতে পারে এ রোগ। এ রোগে মৃত্যুহারও বেশি, ৫ থেকে ৮০ শতাংশ।

এ রোগের লক্ষণ ভূতাত্ত্বিক অঞ্চলভেদে ভিন্ন হতে পারে, অনেকটা ডেঙ্গু রোগের মতো। শুরুতে জ্বর আসতে পারে। সঙ্গে মাথা, পেটে ও গলা ব্যথা হতে পারে। একপর্যায়ে অনবরত বমি হয় এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়। এমনকি শরীরে ফুসকুড়িও দেখা দিতে পারে। দুই থেকে চারদিন পর নিদ্রাহীনতা, যকৃতে প্রদাহ এবং ব্যথা পেটের ডানদিকের উপরের অংশে স্থানান্তরিত হতে পারে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ক্রিমিয়ায় এ রোগ প্রথম শনাক্ত হয়। পরে ১৯৫৬ সালে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে এ রোগ দেখা দেয়। ক্রিমিয়া ও কঙ্গোর নামানুসারে এ রোগের নামকরণ করা হয়েছে ‘ক্রিমিয়ান-কঙ্গো হেমোরেজিক ফিভার’ বা ‘কঙ্গো ফিভার’।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৯)