পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার হেমায়েতপুর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের শিবগঙ্গায় স্নান উৎসব পালনকে ঘিরে ঠাকুর অনুসারী বিবাদমান দু’গ্রুপের মধ্যে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। অনাকাংখিক ঘটনার আশংকা করছেন ঠাকুর অনুসারী ভক্তরা। 

আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর আশ্রমের নিজস্ব পুকুরে শিবগঙ্গা স্নান উৎসবের আয়োজন করেছে আশ্রম কর্তৃপক্ষ। একই দিনে টাঙ্গাইলের পাকুটিয়াস্থ ‘বাংলাদেশ সৎসঙ্গ’ নামের ঠাকুর অনুসারী আরেকটি সংঘ একই স্থানে একই কর্মসূচী নেওয়ায় দীর্ঘদিনের বিবাদমান দু’গ্রুপের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও উত্তেজনা।

সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন শৃংখলা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন হিমাইতপুরের শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ কর্তৃপক্ষ।

আশ্রম কর্তৃপক্ষ জানান, চলতি মাসের ৬ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর তিনদিনব্যাপি ঠাকুরের আবির্ভাব তিথি মহোৎসব সম্পন্ন হয়েছে। মহোৎসবে অর্ধলক্ষাধিক ঠাকুর অনুসারী ভক্ত দেশ বিদেশ ঠাকুরের জন্মস্থানে ছুঁটে আসেন। মহোৎসব ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই ভক্ত অনুসারীদের নিয়ে আসা বাস পাবনা মানসিক হাসপাতালের অভ্যন্তরে নিরাপদ স্থানে রাখার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সদ্য সমাপ্ত হওয়া ঠাকুরের মহোৎসব ঘিরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভক্তদের বহনকারী বাস প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ফলে কাশিপুর থেকে হেমায়েতপুর আঞ্চলিক সড়কের দু’পাশে বাসগুলো রাখার কারণে যানজট ও বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি তারা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ছিলেন।

আশ্রম কর্র্তৃপক্ষের অভিযোগ, ঠাকুরের আবির্ভাব-তিথি ঘিরে মহোৎসবে যানবাহন প্রবেশের বাঁধা দেওয়া হয়েছে। আর ১৬ সেপ্টেম্বরে টাঙ্গাইলের পাকুড়িয়াস্থ ‘বাংলাদেশ সৎসঙ্গ’ নামের ওই সংগঠনকে পাবনা মানসিক হাসপাতালের অভ্যন্তরে উৎসব কর্মসূচী পালন ও গাড়ী পার্কিংয়ের অনুমতি দেওয়ায় বিষয়টি আশ্রম কর্তৃপক্ষকে ভাবিয়ে তুলেছে। পাবনা মানসিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এহেন আচরণে ঠাকুরের ভক্ত অনুসারীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাবনা মানসিক হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. তন্ময় প্রকাশ বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার রায় বলেন, ঠাকুরের জন্মভূমি এই আশ্রমের পুকুরে প্রতিবারের ন্যায় এবারও স্নান উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। অথচ আশ্রমের বিবাদমান গ্রুপ হিমাইতপুর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র আশ্রম কর্তৃপক্ষের কাছে শিবগঙ্গায় স্নানের কোন অনুমতি না নিয়েই তারা কর্মসূচী ঘোষণা করেছেন। যা পরিকল্পিতভাবে অনাকাংখিত বিশৃংখলা তৈরীর নীলনকশা বলে মনে করছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরী।

‘বাংলাদেশ সৎসঙ্গ’র পাবনাস্থ প্রতিনিধি তপন কুমার সরকার হরি জানান, ১৫-১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সৎসঙ্গ’র পক্ষ থেকে ঠাকুরের জন্মতিথি উপলক্ষে নানা আয়োজন রয়েছে। প্রথমদিনে পাবনা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। পরদিন পাবনা মানসিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে হাসপাতাল অভ্যন্তরে ঠাকুরের জন্মস্থানে জন্মতিথি ঘোষণা করা হবে। পরে আশ্রমের পাশেই সম্বলপুর ঘাটে স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম আবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উভয়গ্রুপ যাতে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে পারেন সে সহযোগিতা থাকবে। যে কোন ধরণের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে।

(পিএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৯)