গাইবান্ধা প্রতিনিধি : অধিকার ও সংস্কৃতি রক্ষায় আদিবাসি-বাঙালি যুব মিলি একতায়’ এই শ্লোগান নিয়ে গাইবান্ধায় আদিবাসী যুব মিলন মেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়ে গাইবান্ধা জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আদিবাসী যুব মিলন মেলা উদয়াপন কমিটি ও গাইবান্ধা অবলম্বন যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই আদিবাসী যুব সমাজের পক্ষ থেকে আদিবাসী যুব মিলন মেলা উপলক্ষে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবরে ১৫ দাবি সম্বলিত রুমিলা হেমব্রম স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর কবিরের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আদিবাসী যুব পরিষদের যুব নেত্রী প্রিসিলা মুর্মুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সহকারী ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী সঞ্জিব কুমার ভাটী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর কবির, বাংলাদেশের সাবেক ডেপুটি হাই কমিশনার ও সোহেলী মির্জা ক্যানসার ফাউন্ডেশনের সভাপতি সালাম আজাদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল আউয়াল। প্রধান অতিথিসহ সকল অতিথিরা মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।

আলোচনা পর্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, অবলম্বনের নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্ত্তী, অধ্যক্ষ জহুরুল কাইয়ুম, তেরেসা হেমব্রম প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আদিবাসী যুবসমাজের পক্ষে রুমিলা হেমব্রম। শেষে আদিবাসী যুবক যুবতির পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করা হয়।

আদিবাসী মিলন মেলা উপলক্ষে স্মারকলিপিতে উল্লেখিত দাবিগুলো হচ্ছে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী নয়, আদিবাসীদের সংবিধানে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয়, ভূমি কমিশন গঠন, রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ৯৭ ধারার পূর্ণবাস-বায়ন, উপজেলা পর্যায়ে সাংস্কৃতিক একাডেমিক নির্মাণ, আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের পৃথক আবাসিক হোষ্টেল, আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তি সাধারণের চেয়ে দ্বিগুন বৃদ্ধি, কোটা অনুযায়ী আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের চাকুরী নিশ্চিত করণ, বাদপড়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নাম গেজেট ভূক্ত করা, জুলুম নির্যাতন, হত্যা ভূমি দখল বন্ধ করা, মাতৃভাষায় শিক্ষার ব্যবসা, স্থানীয় ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত আসন, যুবসমাজের জন্য উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে পৃথক প্লাটফর্ম তৈরী, আদিবাসী যুবসমাজের পৃথক কারিগরি প্রশিক্ষণ ও ঐতিহ্যবাহি জিনিসপত্র রাখার পৃথক মিউজিয়াম।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৯)