গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : দেশী মুরগী পালন করে শামীম এখন স্বাবলম্বী। তাঁর খামারের নাম কে আই এগ্রো ফার্ম। তাঁর বাড়ি গৌরীপুর পৌর শহরের কালীপুর মধ্যমতর‌্যফ এলাকায়। বছর খানেক আগে বিশ হাজার টাকা নিয়ে মুরগী পালন শুরু করা শামীমের খামারে এখন দুই লাখ টাকার উপরে বিভিন্ন বয়সী মুরগি রয়েছে। পাশপাশি স্থানীয় ২৭টি খামারেও  মুরগির বাচ্চা ও ডিম সরবরাহ করেন তিনি। প্রতিমাসে সব বাদ দিয়ে তার ত্রিশ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।

শামীম আলভী জানান, বছর খানেক আগে বেকারত্ব ঘোচাতে ঢাকায় মুরগি পালনের প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি ফিরে দেশী মুরগির খামার দেয়। প্রথম দিকে ২০ হাজার টাকায় ২০০ পিছ দেশি মুরগি বাচ্চা তুলেন খামারে। তিন মাস লালন-পালন করে ৬০ হাজার টাকা বিক্রি করেন। সেই থেকে শুরু এরপর তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। দেশী মুরগিই তাঁর ভাগ্য বদল করে দিয়েছে।

উপজেলা শহরে জমি ভাড়া নিয়ে এ খামার করেছেন শামীম। তার খামার থেকে দেশী মুরগির বাচ্চা, ডিম ও মাংসের মুরগির উৎপাদন করে বাণিজিক্য ভাবে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়। কে আই এগ্রো ফার্মে গিয়ে দেখা যায় নেট ধারা আবৃত শেড ঘরে দেশী মুরগি লালন-পালন ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রথম শেডে ছোট মুরগির বাচ্চা। দ্বিতীয় শেডে ডিম পাড়া মুরগি। তৃতীয় শেডে মোরগ। তবে মোরগগুলো বিক্রির জন্য নয়, খামারের উন্নত মানের ডিম উৎপাদনের জন্য প্রজননের জন্য রাখা।

শামীম বলেন, খামারের ডিম খাওয়ার জন্য বিক্রি হয় না। এগুলো থেকে বাচ্চা উৎপাদনের জন্য বিক্রি হয়। প্রতিটি বীজ ডিম ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হয়। আর ডিম থেকে ফুটানো বাচ্চা প্রতি পিছ ৪০ টাকা বিক্রি হয়।

ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদনের জন্য নিজস্ব মেধা খাঁটিয়ে বৈদ্যুতিক ইনকিউবেটর তৈরি করেছেন শামীম। খামারের ডিম ইনকিউবেটরে ফুটানোর পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে তিনি ইনকিউবেটর বিক্রি করেন। প্রতিটি ইনকিউবেটরের দাম ২৭ হাজার টাকা।

ইনকিউবেটরে ডিম থেকে ফুটানো বাচ্চা বিক্রির পাশাপাশি নিজ খামারে তিন মাস পালন করেন শামীম। খাওয়া ও পরিচর্যা বাবদ প্রতিটি বাচ্চার পিছনে প্রায় ১১০ টাকার মতো খরচ হয়। কিন্তু বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা।

শামীম বলেন, ব্রয়লার, সোনালি ও কক মুরগি পালনের চেয়ে দেশী মুরগি পালন অনেক সাশ্রয়ী। কারণ দেশী মুরগিগুলো আমাদের আবহাওয়ার সাথে উপযোগী। তাছাড়া খুব বেশি রোগ-পীড়া হয়না। তাই খামরিদের আর্থিক ক্ষতির সম্ভবনা খুব কম থাকে।

দেশী মুরগি পালন করে শামীমের স্বাবলম্বী হওয়ার বিষয়টি অনুপ্রাণিত করেছেন স্থানীয় অনেক বেকার যুবকদের। তাদেরই ্একজন সহনাটি গ্রামের অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী সাকিব আল হাসান। তিনি বলেন, শামীম ভাইয়ের পরামর্শে আমি বাড়িতে দেশী মুরগির খামার করে লাভের মুখ দেখেছি। এখন নিজেই নিজের পড়াশোনার খরচ চালাই।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯)