বিশেষ প্রতিনিধি : তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের গণবিরোধী শিক্ষানীতির প্রতিবাদে এবং একটি গণমুখী শিক্ষানীতি প্রবর্তনের দাবিতে ১৯৬২ সালের ছাত্র-জনতার ব্যাপক গণআন্দোলনের রক্তাক্ত স্মৃতিবিজড়িত দিন ১৭ সেপ্টেম্বর। সে দিন যে চেতনায় আন্দোলন হয়েছে সেই চেতনা আজও তা অধরা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা এত সময়ের পরও আমাদের শাসকগোষ্টি একটি সার্বজনিন শিক্ষানীতি প্রনয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আর অন্যদিকি শিক্ষা অধিকার আজ বাণিজ্যে পরিনত হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সকল স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠা দুর্নীতিবাজদের কালো ধাবায় ধ্বংসের দাড়প্রান্তে পৌছে গেছে।

মঙ্গলবার নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে ৫৭তম শিক্ষা দিবস স্মরণে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশের একশ্রেণীর শিক্ষক নামধারী শিক্ষাকে বাণিজ্যে পরিণত করেছে। ওই শিক্ষকদের জীবনমান প্রমাণ করে তারা শিক্ষাকে শোষণের হাতিয়ারে পরিণত করেছেন। তারা ভুলে গেছেন শিক্ষা বাণিজ্য নয়, অধিকার। সরকার ও দেশের সচেতন নাগরিকদের উচিত ওই সব শিক্ষক নামধারীদের আয়ের উৎস খুঁজে বের করা। দুদকের দায়িত্ব শুধু রাজনীতিবিদদের কলঙ্কিত করা নয়। সমাজের শিক্ষক নামধারী দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি খুঁজে বের করাও তাদের দায়িত্ব।

ন্যাপ মহাসচিব আরো বলেন, গত কয়েকদিনে গণমাধ্যমে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে তাতে প্রমানিত হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠের সর্বোচ্চ আসনে বসে এই সকল শিক্ষিত সমাজই রাষ্ট্রকে ধ্বংসের পথে দিয়ে যাচ্ছে। আজ জনমনে প্রশ্ন উঠেছে উপাচার্যদের হাত ধরে একেকটি বিশ্ববিদ্যালয় কি তবে অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে? এমন এক পরিস্থিতি বিরাজ করছে যে, সকালে যাকে সাধু মনে হচ্ছে রাত নামলেই দেখা যায় তারাও লোভের পথে দুর্নীতির অন্দকার গলিতে নগ্নভাবে হাটছেন।

তিনি বলেন, দেশের শাসকগোষ্টি ‘টাকা যার শিক্ষা তার’ এই নীতির বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পালন করে গেছে অগ্রণী ভূমিকা। ’৫২'র ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে ’৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, যার অনিবার্য পরিণতিরূপে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ। তেমনিভাবে বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রসমাজ সর্বগ্রাসী শিক্ষা সঙ্কট উত্তরণে রচনা করবে ছাত্র গণআন্দোলন, যা বেগবান করবে সমাজ বিপ্লবের লড়াইকে। এই হোক মহান শিক্ষা দিবসের অঙ্গীকার।

বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান কাজী ফারুক হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব মো. আতিকুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, সহ-সম্পাদক এডভোকেট আবদুস সাত্তার, ঢাকা মহানগর যুগ্ম সম্পাদক মো. শামিম ভুইয়া, শ্রম সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান, মহিলা সম্পাদিকা সাদিয়া ইসলাম ঈমন, যুব ন্যাপ সমন্বয়কারী বাহাদুর শামিম আহমেদ পিন্টু প্রমুখ।

(এম/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯)