স্টাফ রিপোর্টার : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের দায়ে পদচ্যুত ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক কবে জেলে যাবে সরকারের কাছে সেই প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী নবীন দল এ সভার আয়োজন করে।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী হয়েও মাত্র দুই কোটি টাকার মামলায় যদি কারাবন্দি থাকতে পারেন তাহলে ছাত্রলীগের সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী জাবির উন্নয়ন প্রকল্পের ৮৬ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে কবে জেলে যাবে?

মোশাররফ বলেন, ‘ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদককে বহিষ্কার করা হয়েছে। আবার সরকারি দলের লোকেরা বলছেন, ছাত্রলীগ থেকেও যুবলীগের মধ্যে বড় দুর্নীতি-টেন্ডারবাজি আছে। এমন অভিযোগও আছে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অপসারণের সঙ্গেও নাকি অনেকে জড়িত রয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন বালিশ দুর্নীতি, পর্দা দুর্নীতি, বই দুর্নীতি। পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে, কোনো একটা প্রতিষ্ঠান ১০ কোটি টাকার সরঞ্জাম পাহারা দেয়ার জন্য ৪৫ কোটি টাকা খরচ করেছে। এভাবে দেশ চলছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘যে মামলায় বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে সে মামলার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততাই নেই। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। যে দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খালেদা জিয়াকে জেলে আটকে রাখা হয়েছে সেই টাকা আজ ৬ কোটিতে পরিণত হয়েছে। দুই কোটির জায়গায় ৬ কোটি হলে আত্মসাৎ করা হলো কীভাবে?’

তিনি বলেন, ‘সরকারের উদ্দেশ্য ছিল খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে বিএনপিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে দূরে রেখে আবারও ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করে অলিখিত বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু আমরা বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নির্বাচনে গিয়েছি। তখন আমরা দেখেছি, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ধানের শীষে ভোট দিতে মানুষ কতটা প্রস্তুত ছিল, কতটা ব্যাকুল ছিল। এ কথা জানতে পেরে সরকার ৩০ ডিসেম্বরের ভোট জনগণের হাতে দিতে সাহস পায়নি। তাই ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোট ডাকাতি হয়েছে, জনগণের ভোট ডাকাতি করে তারা আজ গায়ের জোরে সরকার পরিচালনা করছে।’

মোশাররফ বলেন, আজকে বাংলাদেশের সবচেয়ে সংকট হচ্ছে গণতন্ত্রহীনতা। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকার কারণেই বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন করে রাখা সম্ভব হয়েছে। দেশে অলিখিত বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে। অলিখিত বাকশালকে পাকাপোক্ত করার জন্য বেগম জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা চাই বেগম জিয়া দ্রুত মুক্তি পাক, তিনি মুক্তি না পেলে দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে সভায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রশিক্ষণ সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ ও কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯)