আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোর থেকে ৫২ কিলোমিটার দূরের জেলা কাসুরে তিনজন অল্পবয়সী কিশোরকে বলাৎকারের পর হত্যা করা হয়েছে। দেশটির পুলিশ নিখোঁজ ওই তিন কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করার পর বিক্ষোভ শুরু হয়েছে বলে দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে।

পাঞ্জাবের ওই একই জেলায় গত বছরের জানুয়ারিতে জয়নব আনসারিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল। তার মরেদহ পাওয়া গিয়েছিল একটি আবর্জনার স্তুপ থেকে। সেই ঘটনায় গোটা পাকিস্তানের মানুষ বিক্ষোভ করেছিল। সেই ঘটনার রেশ না কাটতেই একই জেলায় এমন ঘটনা ঘটলো।

তবে এটা এখনো জানা যায়নি যে ওই তিন কিশোরকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে। কাসুর জেলা পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল গফুর বলেন, পুলিশ ধারণা করছে ওই তিন কিশোরকে হত্যার আগে বলাৎকার করা হয়েছিল। ময়নাতদন্ত শেষ হলে আরও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।

পুলিশ মরেদহগুলো ফরেনসিক তদন্ত ও ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠিয়েছে। ঘটনার পর কাসুর জেলা ও আশপাশের এলাকায় দোকানপাট বন্ধ করে বুধবার বিক্ষোভ জানিয়েছে মানুষ। বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তা অবরোধ করে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে পাথর নিক্ষেপ করছে। তারা অপরাধীদের বিচারের দাবি জানাচ্ছে।

পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, কয়েক মাস আগে কাসুর থেকে চার কিশোর নিখোঁজ হয়। উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো কয়েক মাস আগে হারিয়ে যাওয়া ওই চার কিশোরের মধ্যে তিনজনের। মরদেহগুলো উদ্ধারের খবর জানার পর স্থানীয় জনতা দোকানপাট বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেছে।

পাকিস্তানের গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার পুলিশ মরেদহগুলো উদ্ধারের পর কিছু এলাকায় বিক্ষুব্ধ জনতা দোকান বন্ধ করে একত্রিত হয়ে বিচারের দাবি জানাচ্ছে। স্থানীয় বাণিজ্য সংগঠন ও আইনজীবীদের সংগঠন হরতালের ডাক দিয়েছে। এখনও কাউকে গ্রেফতার করিতে পারেনি পুলিশ।

মরদেহ উদ্ধার হওয়া তিনজনের মধ্যে দুজনের বয়স আট এবং একজনের নয় বছর। আট বছর বয়সী সালমান ও নয় বছর বয়সী আলি হাসনাইন গত আগস্ট থেকে নিখোঁজ। ফাইজান নামের আট বছর বয়সী অপর কিশোর গত ১৬ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, চার কিশোরের মধ্যে একজন হলো ১২ বছর বয়সী ইমরান। গত ১ জুন সে নিখোঁজ হয়। তবে সে বেঁচে আছে কিনা তা এখনো জানা যায়নি। ইমরানের পরিবার এখনও তাদের সন্তানের খোঁজ পায়নি বলে পুলিশকে জানিয়েছে।

তিন কিশোরের মধ্যে শুধু ফাইজানের মরেদহটি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। বাকি দুটি মরদেহ ছিন্নভিন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। কাসুর জেলার চুনিয়ান বাণিজ্যিক এলাকার একটি বালির ডিবি থেকে তাদের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।

পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরির্শক (আইজিপি) আরিফ নওয়াজ খান এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তারা ঘটনাটিকে শিশু অপহরণ ও হত্যা মামলা হিসেবে দেখছে। দেশটির জিও টেলিভিশন এক অনলাইন প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।

কাসুর জেলা পুলিশ সুপার কুদ্দুস বেগের (তদন্ত) নেতৃত্বে একটি বিশেষ দলকে এই মামলা তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী তিন ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের মহাপরিদর্শককে তাদের প্রাথমিক তদন্তের ফলাফল জানোনোর নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ওসমান বাজদার তিন কিশোর ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। তিনি প্রাদেশিক পুলিশ প্রধানের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছেন। তবে এখনও পুলিশ প্রধান মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেননি।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯)