স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহ বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক বিলাস চন্দ্র সরকারের বাসা থেকে ৩৩ লাখ টাকা উদ্ধারের খবরটি এখন টক অবদি ঝিনাইদহে পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। ঝিনাইদহ বিআরটিএ ঘুষ বানিজ্য ও দুর্নীতির যে আখড়া ছিল তা বিলাস সরকারের মৃত্যুর পর তার বাসার আলমারিতে রাখা ৩৩ লাখ উদ্ধারের মধ্য দিয়ে প্রমানিত হলো। 

ফেসবুকে ভুক্তভোগীরা ড্রাইভিং লাইসেন্স ও যানবাহনের রেজিষ্ট্রেশন করতে কত টাকা কার হাতে দিয়েছেন তাও উল্লেখ করে নেতিবাচক সব মন্তব্য করছেন। বুধবার সন্ধ্যার দিকে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ শহরের কলাবাগান পাড়ার ভাড়া বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৩৩ লাখ ২০ হাজার টাকা উদ্ধারের পর এই খবর ফেসবুক ও বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় ছড়িয়ে ভাইরাল হয়ে পড়ে।

জানা গেছে, দাম্পত্য কলহের কারণে স্ত্রী সন্তানরা বিলাস সরকারের সঙ্গে থাকতেন না। তিনিসহ তার পরিবারের অনেকেই ছিল মাদকাসক্ত। কলাবাগান পাড়ার বাসায় তিনি নিয়মিত মদের আসর বসিয়ে নারী নিয়ে ফুর্তি মারতেন এমন গল্পও মানুষের মুখে মুখে চাউর হয়ে পড়েছে। এমনও শোনা যায় বিলাস সরকার অনেক নারীকে বাড়ি বানিয়ে দিয়েছেন ঝিনাইদহ শহরে।

জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে জানান, খবর পেয়ে ১২ সেপ্টেম্বর ছেলে ও স্ত্রী ঝিনাইদহে আসেন। তাদের উপস্থিতিতে বাসার আলমারি খুলে ৩৩ লাখ ১৮ হাজার নগদ টাকা পাওয়া যায়। “ছেলেরা দাবি করেন তার বাবার ছয়টি ব্যাংকে ঋণ আছে। পরে ওই ব্যাংকগুলোতে যাচাই করে প্রশাসন নিশ্চিত হয় যে বিলাশ সরকারের নামে কোনো ঋণ নেই।”

এরপর জেলা প্রশাসক খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ও ঢাকায় বিষয়টি জানান উল্লেখ করে বলেন, “সবাই ধারণা করছেন এগুলো ঘুষের টাকা। তাই এ টাকা আটকে ট্রেজারিতে জমা রাখা হয়েছে।” উদ্ধারকৃত এই টাকা যানবাহনের রেজিষ্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নামে ঘুষ হিসেবে গ্রহন করা হয়েছিল বলে অনেকে মনে করছেন।

উল্লেখ্য গত ১০ সেপ্টম্বর ঝিনাইদহ বিআরটিএর সহকারী পরিচালক বিলাস সরকার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

(জেআরটি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯)