ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের ভেলাজান আনছারিয়া ফাযিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসায় ক্লাশ চলাকালিন সময়ে ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত দুই শিক্ষর্থীকে অসামাজিক অবস্থায় আটক করেছে স্থানীয় আলমগীর নামে এক যুবক।

এসময় আটককারি আলমগীর ছেলে-মেয়ে দুজনকে এক রুমে আটক করে মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল আবেদুর রহমানকে জানালে উল্টা তাকেই থাপ্পর মেরে হেনস্থা করে বলে জানিয়েছে হেনস্থার শিকার আলমগীর। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায়।

এ ঘটনায় আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্ব) দুপুরে মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও চিলারং ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সহ মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সদস্যরা মিটিং করে পুণরায় আলমগীরকেই দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করলে স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে তা ভেস্তে যায়। পরে বিষয়টি নিরসনে আজ সন্ধ্যায় স্থানীয় এমপি ও আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এর বাসভবনে বসার কথা রয়েছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় মাদ্রাসার এতিমখানার পরিত্যাক্ত একটি রুমে মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হোসনেআরার ছেলে (মাদ্রাসার ২য় বর্ষের ছাত্র) সাদ হোসেন শামীম ও একই বর্ষের একটি মেয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়। এ খবর জানতে পেরে স্থানীয় যুবক আলমগীর তড়িৎ গতিতে সেখানে উপস্থিত হয়ে তাদের রুমের দরজা লাগিয়ে মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল আবেদুরকে ডেকে ঘটনাটি বললে তিনি তাদের ছেড়ে দিয়ে উল্টো তাকে চড়-থাপ্পর মেরে মাদ্রাসা ত্যাগ করতে বলেন।

বিষয়টি আলমগীর এলাকাবাসিকে জানালে এলাকাবাসি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন। সে মোতাবেক আজ শনিবার বিষয়টি নিয়ে বসার উদ্যোগ নিলে গভর্নিং বডির সদস্যরা তাদের স্টাফদের পক্ষাবলম্বন করে আলমগীরকেই দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করে। এতে স্থানীয়রা বিক্ষোভ প্রদর্শন করলে গভর্নিং বডির সভাপতি বিষয়টি নিরসনে স্থানীয় এমপি মহোদয়ের নিকট বসার বন্দোবস্ত করেন।

এলাকাবাসি জানান, এ কেমন বিচার? যারা অনৈতিক কাজ করলো তাদের বিচার না করে যে তাদের বাঁধা দিলো তারই বিচার করা হচ্ছে!

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ খোরশেদ আলম বলেন, আসলে বিষয়টি খুবই লজ্জাজনক। এটির সাথে মাদ্রাসার মান-সম্মান জড়িয়ে রয়েছে। গভর্নিং বডির সভাপতি ও স্থানীয় চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী যেহেতু বিষয়টি নিরসনে এমপি মহোদয়ের বাসায় বসার উদ্যোগ নিয়েছেন। সন্ধ্যায় সকল শিক্ষকরা মিলে সেখানে যাবো, তিনি যে রায় দিবেন সেটাই মেনে নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, মাদ্রাসার অনিয়মতান্ত্রিকতার কারণে ইতিমধ্যে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা হ্রাস সহ ঐতিহ্যবাহি এ মাদ্রাসার সুনাম নষ্ট হতে বসেছে।

(এফ/এসপি/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯)