গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক চারলেনে উন্নতিকরণকল্পে সরকার জমি অধিগ্রহণ কাজ শুরু করেছেন। সেই জন্য জমি অধিগ্রহণসহ দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকলে দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ। সেই আশায় আশায় নতুন করে রাস্তার দু’ধারে স্থাপনা নির্মাণ করছেন জমির মালিকগণ। নতুন করে জমি অধিগ্রহণকল্পে ক্রয় করা হবে জমি এবং ব্যবসায়ীকে দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ। সেই মুহূর্তে কিছু অসাধু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মহাসড়কের দু’ধারে আবাদি ও পতিত জমিতে নিন্মমানের সামগ্রী দিয়েই নতুন করে দোকান ঘর, মার্কেট নির্মাণে উঠে-পড়ে লেগেছেন। 

পুরাতন ও নবনির্মিত স্থাপনা গুলোর জন্য নতুন করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে সাইনবোর্ড লাগানোর হিড়িক পড়েছে। ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ এবং দোকান ঘর ভাঙ্গার ক্ষতিপূরণ নেওয়ার জন্য এ নির্মাণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন মহাসড়কের দু’ধারের পতিত জমির মালিকগণ। এসব দেখে জেলা প্রশাসক ২১ সেপ্টম্বর জনস্বার্থে মাইকিং করে জানায় রাস্তার দুধারে সমস্ত অবৈধ স্থাপনা নিজ দায়ীত্বে সরাইতে বলেছেন। এখন দেখা যাচ্ছে লাভের ধন পিঁপড়া খাইল। কথায় আছে বিক্ষা চাই না কুকুর খেদাও।

এমনকি বসতবাড়ি ভেঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে মার্কেট। এর ফলে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের দু’পার্শ্বে প্রতিদিন নতুন করে জেগে উঠা স্থাপনা চোখে পড়ছে। এমনকি কয়েকদিন আগেও যে জায়গা গুলো ফাঁকা পড়ে ছিল সেই জায়গাগুলোতেও তৈরি করা হয়েছে দোকান ঘর। অনেকেই কাগজে-কলমে দোকান ঘর ভাড়া নিচ্ছেন স্বার্থ হাসিলের আসায়। ঈদের ছুটিকে পুঁজি করে রাতের আঁধারে আঁধা-পাঁকা টিনসেড ঘর নির্মাণের শুরু হয়।

এর ফলে সচেতন মহলের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, চলছে চায়ের দোকানে আলোচনা কে কতো টাকা পাবে? দোকান ঘর ভাড়া নেওয়া ও দেওয়ার জন্য চুক্তিনামা তৈরি এবং চুক্তিনামা না থাকলে চুক্তির আওতায় আশার জন্য ভাড়াটিয়া ও ঘর মালিকের মাঝে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। সচেতন মহল বলছেন, ঘর ভাঙ্গার টাকা ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিপূরণ নেওয়ার জন্য এ পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন।

ইতিপূর্বে যে জায়গা গুলো ছিল অধিকাংশই ফাঁকা ও আবাদি জমি তা দ্রুত গতিতে ফসলহানী করে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন। উপজেলা সদরে মহাসড়কের দু’ধারে ব্যবসা ছেড়ে দেওয়া ব্যবসায়ীগণ নতুন করে দোকান ও প্রতিষ্ঠান খুলে ঘুরে বসেছেন। দ্রুত এ নির্মাণে ও প্রতিটি প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় উপজেলার দৃশ্যপট পাল্টে যাচ্ছে। এর সাথে তাল রেখে নতুন সাইনবোর্ড তৈরি ও লাগানোর হিড়িক পড়েছে। একই ব্যক্তি ব্যবসায় আলাদা নামে দুই রুমে দুইটি দোকান উল্লেখ করে সাইনবোর্ডও লাগাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোডর্স এন্ড হাইওয়ের এক কর্মকর্তা জানান, যারা নতুন করে কোন স্থাপনা নির্মাণ এবং নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করছেন তাহারা ক্ষতিপূরণ হিসাবে কোন অর্থ পাবেনা। কারণ কাজ শুরুর পূর্বেই মহাসড়কের দু’ধারের স্থাপনার ছবি ও ভিডিও সংরক্ষিত করা আছে, প্রকৃত ব্যক্তিরা সেই অনুপাতেই ক্ষতিপূরণ পাবে।

নতুন করে অবকাঠামো নির্মাণ চিত্রে তিনি আরও বলেন, আপনার জায়গায় আপনি ঘর তুলছেন আমরা বাঁধা দেবো কেনো? যেহেতু সীমানা নির্ধারণ ও কোন প্রকার নোটিশ প্রদান করা হয় নাই। এ বিষয়ে ৬টি দপ্তর কাজ করছেন এবং বিচার বিশ্লেষণ করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে।

যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য নতুন করে দোকান ঘর নির্মাণ ও ব্যবসায়ী হিসেবে ক্ষতিপূরণ নেওয়ার পায়তারা করছেন এদের বিষয়ে ভালোভাবে খোঁজখবর নিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টিআকর্ষণ ও জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতনমহল।

এ বিষয়ে ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার জেলা প্রশাসক কর্তৃক এক সতর্কতামুলক গণমাইকিং করে নুতুন স্থাপনাগুলো নিজ খরচে সরে নিতে বলা হয়। জেলা প্রশাসকের মাইকিং করার পরও তারা কাজ করা থেকে বিরতী নেই। রাস্তা দুধারে যেন পূর্বের চেয়ে দ্রুতগতী নির্ণনের কাজ চলছে।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯)