উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ১নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর ১৫ সদস্যের একটি গেরিলা দল গুতুমা নামক স্থানে পাকসেনাদের এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে ৩ জন পাকসেনা হতাহত হয়।

১নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী রকেট লাঞ্চারের সাহায্যে পাকসেনাদের চম্পকনগর বিত্তপি অবস্থানের ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর বহু বাঙ্কার বিধ্বস্ত হয় এবং ৫ জন সৈন্য হতাহত হয়।

২নং সেক্টরে পাকবাহিনী একটি লঞ্চে নওয়াবগঞ্জের দিকে অগ্রসর হলে গালিমপুরের কাছে একদল গেরিলা লঞ্চটির ওপর অতর্কিতে আক্রমণ করে। এই যুদ্ধ ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত চলে। শেষ পর্যন্ত পাকসেনারা মুক্তিবাহিনীর গেরিলাদের যোদ্ধাদের কাছে পর্যুদস্ত হয়। এই যুদ্ধে পাকবাহিনীর ক্যাপ্টেন জাফর আলী খান, সুবেদার আবদুল্লাসহ ৪৬ জন সৈন্য নিহত হয় এবং লঞ্চটি ডুবে যায়। অপরপক্ষে মুক্তিবাহিনীর বীর গেরিলা যোদ্ধা আবদুর রহিম এবং মুহম্মদ আলী শহীদ হন।

ছাতকের টেবলাই নামক গ্রামে অবস্থানরত এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধার ওপর পাকসেনাদের তিনটি দল মিলিতভাবে আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রের সাহায্যে একযোগে আক্রমণ চালায়। কিছুক্ষণ যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা কৌশল পরিবর্তন করে মেলা সাব-সেক্টরের সদর দপ্তর বাঁশতলা পর্যন্ত পিছিয়ে যায়। বাঁশতলা থেকে শক্তি সঞ্চয় করে মুক্তিযোদ্ধারা আবার পাল্টা আক্রমণ চালালে পাকসেনারা রণে ভঙ্গ দিয়ে পালিয়ে য়ায়। ৪ ঘন্টা ব্যাপী এ যুদ্ধে ৪ জন পাকসেনা নিহত ও অনেক আহত হয়। অপরদিকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

ফরিদপুর সাব-সেক্টর কমান্ডার নূর মোহাম্মদের যুদ্ধ রিপোর্ট :
ফরিদপুরের ভাটিয়া পাড়ায় মুক্তিবাহিনী দঃসাহসিক অভিযান চালিয়ে ১৭ জন পাকসৈন্যকে হত্যা করে এবং ৯ জনকে আহত করে। মুক্তিবাহিনী ভাটিয়াপাড়া ওয়ার্লেস স্টেশন ধ্বংস করে দেয়। অপরদিকে ভেদরগঞ্জে মুক্তিবাহিনীর আর একটি আক্রমণে ৮৫ জন পাকপুলিশ ও রাজাকার নিহত হয়।

ঢাকায় মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধা এনায়েত ও আবুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-এর সামনের রাস্তায় প্রাদেশিক সরকারের মৌলিক গণতন্ত্র ও স্থানীয় স্বায়ত্বশাসন মন্ত্রী মওলানা মোহাম্মদ ইসহাকের গাড়ীতে গ্রেনেড আক্রমণ চালায়। এতে মওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও গাড়ীর ড্রাইভার গুরুতর আহত হন।

করাচীতে একজন সরকারী মুখপাত্র ঘোষণা করেন : পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা সম্পর্কে ভারতীয় অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাসীর সামনে প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরার জন্য পাকিস্তানের যেসব প্রতিনিধি বিদেশ সফর করছেন তাদের মধ্যে দৈনিক ‘ইত্তেফাক’-এর সাংবাদিক খন্দাকার আবদুল হামিদ রয়েছেন।

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন কনসাল জেনারেল হারবার্ট ড্যানিয়েল স্পিভাক জামায়াত নেতা আব্বাস আলী খানের সাথে সাক্ষাৎ করেন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব সুলতান মোহাম্মদ খান জাতিসংঘ মহাসচিব উ‘থান্টের কাছে এক পত্রে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ করেন। পত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘দুঃখের সঙ্গে স্বীকার করতে হয় যে, জাতিসংঘের কতিপয় সদস্য রাষ্ট্র জাতিসংঘ বিধির প্রতি সমর্থনের বুলি আওড়িয়ে প্রকৃতপক্ষে জাতিসংঘের মূলনীতিকে ধ্বংস করার কাজে লিপ্ত থেকে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিপন্ন করে তুলেছে।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।

(ওএস/অ/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯)